ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় - ওসিডি কেন হয়
সূচিপত্র
ভূমিকাঃ ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয়
ওসিডি রোগের পূর্ণরূপ হল Obsessive Compulsive Disorder যেদিকে বাংলা ভাষায় শুচিবায় বলা হয়। আমাদের এই বাংলাদেশ প্রায় অনেক রোগী এই বড় বড় রোগে ভুগছে। এ রোগটির ফলে সাধারণত মনের ভেতরে একই রকম চিন্তা ভাবনা বারবার আসতে থাকে। একজন রোগী সে নিজেও জানে এই চিন্তা ভাবনাটি যৌক্তিক কিন্তু সে এই চিন্তাটি নিবারণ করতে পারে না অর্থাৎ মনের ভেতর থেকে বের করতে পারে না।
আরো পড়ুনঃ জীবাণুনাশক এন্টিবায়োটিক ড্রপের নাম
পরিশেষে তারা এই সমস্ত চিন্তা ভাবনা করতে করতে হতাশ হয়ে পড়ে এবং একসময় চূড়ান্ত পর্যায়ের মানসিক রোগী হয়ে যায়। তাই আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে তা বিস্তারিত দেয়া হলো।
ওসিডি লক্ষণ
প্রিয় পাঠক ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় সেই বিষয়টি জানার আগে আমরা আগে জেনে নেই ওসিটি রোগের লক্ষণ সমূহ গুলো। কেননা ওসিডি রোগের ওষুধ খেতে হলে আগে ও সিটি রোগের লক্ষণগুলো নির্ণয় করতে হবে। এর জন্য এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে নিম্নে ওসিডি রোগের লক্ষণগুলো দেওয়া হলোঃ
- প্রথমত ওসিডি রোগীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে অধিক সচেতন দেখা দেয়। তারা একটি জিনিস বারবার পরিষ্কার করতে থাকে।
- যদি একজন মানুষের ভেতরে যদি দেখেন বারবার কাউকে আঘাত করতে চাচ্ছে তাহলে বুঝবেন সে ওসিডি রোগী।
- একজন মানুষ যদি যৌনতা নিয়ে বিভিন্ন রকম উদ্ভাট চিন্তাভাবনা করে তাহলে বুঝবেন সেটি ওসিডি রোগের লক্ষণ।
- ধর্মীয় বিষয়ে হতাশ হয়ে আল্লাহ তায়ালার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল চিন্তাভাবনা করতে থাকে।
- যে কোন জিনিস তার মনের মতো সাজানো না হলে তার ভেতরে অস্থিরতা কাজ করে। সেই সময় মাথাতে অনেক রাগ উঠে যায়।
সুতরাং বলা যায় প্রিয় পাঠক উপরোক্ত লক্ষণগুলো যদি কারো মাঝে বা আপনার মাঝে দেখা যায় তাহলে ভাববেন সেটি ওসিডি রোগের লক্ষণ। এই সমস্ত লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণাৎ যে কোন মানসিক ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। প্রিয় পাঠক এবার নিচে ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো। বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।
ওসিডি কি ভাল হয়
প্রিয় পাঠক যদি কারো ওসিডি রোগ হয় তাহলে সেটি অবশ্যই পুরোপুরি ভালো হবে। আবার অনেকজন আছে যাদের এই রোগ ভালো হতে চাই না ভালো হলেও অল্প ভালো হয়। আপনার যারা ওসিডি রোগ পুরোপুরি ভালো করতে চান তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওসিডি রোগের ওষুধ ভালোভাবে এবং নিয়ম কানুন মেনে সেবন করবেন। ওসিডি রোগ পুরোপুরি ভালো হয় তবে তার সংখ্যা খুবই কম।
ভালো হওয়ার পর যদি আবার একই ধরনের সমস্যা হয় তাহলে আগে যে ওষুধ গুলো সেবন করতেন সেই ওষুধ গুলো আবার পুনরায় সেবন করতে হবে। অসিত সেবন করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ আবার গ্রহণ করবেন। সুতরাং পরিশেষে বলা যায় ওসিডি রোগ ভালো হওয়ার সংখ্যা খুবই কম।
ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে
প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা ওসিডি রোগের লক্ষণ এবং প্রতিটি রোগ কি ভাল হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। এবার চলুন আমরা নিম্নে ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। নিম্নে তা দেওয়া হলোঃ
আরো পড়ুনঃ খিচুনি রোগের লক্ষণ - খিচুনি রোগের ঘড়োয়া চিকিৎসা
প্রিয় পাঠক ওসিডি রোগীরা সাধারণত সবসময় অস্থিরতায় ভুগতে থাকে। ওসিডি রোগ বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে যেমন- বংশগত কারণে, আশেপাশের পরিবেশ গত কারণে অথবা জন্ম থেকে মস্তিষ্কের ভিন্ন রকম গঠনের ফলেও এই রোগ সৃষ্টি হয়। এর জন্য ওসিডি রোগের ওষুধ গুলো সঠিক উপায়ে সেবন করা প্রয়োজন। নিম্নে প্রসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হল।
- ওসিডি রোগে আক্রান্ত রোগীকে ময়লা জায়গায় হাত দিতে দিবেন কিন্তু হাত ধুতে দিবেন না। যদি রোগী হাত ধুতে যায় তাহলে তাতে বাধা দিবেন। বাধা দেওয়ার ফলে তার মস্তিষ্কের অর্থাৎ মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।
- ওসিডি রোগে আক্রান্ত রোগীর তার চিন্তাধারার ত্রুটি বের করে যে কোন একটি ভালো মানসিক ডাক্তার দ্বারা সাইকোথেরাপির ব্যবস্থা করে ট্রিটমেন্ট দিতে থাকবেন।
- একজন রোগের তার অস্বাভাবিক আচরণ বারবার তাকে বোঝাতে হবে অথবা ফোনে তার অস্বাভাবিক আচরণ রেকর্ড করে তাকে দেখাতে হবে যেন সে তার অস্বাভাবিক আচরণটা বুঝতে পারে এবং সেই পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসতে পারে।
- যেকোনো একটি ভালো চিকিৎসার পরামর্শ অনুযায়ী TCA- Calomiparamive ( SSRI ) Fluoxetine, Sertalline, Flvuoxamin ইত্যাদি ঔষধ গুলো অধিক ডোজে দিতে হবে। কেননা অস্থিরতা প্রতিরোধে ঔষধ আস্তে আস্তে অধিক মাত্রায় না দিলে অবেসন কমে না।
- ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় সেটি সঠিকভাবে বলা যায় না যতক্ষণ না ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা যায়। মূলত এই রোগের ঔষধ যতদিন না রোগ সারাবে ততদিন পর্যন্ত সঠিক নিয়মে অর্থাৎ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে। আর যদি ওষুধ বাদ দিয়ে দেন তাহলে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন। এর জন্য নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
- ওসিডি রোগে আক্রান্ত রোগীকে তার বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন পরিবেশের সাথে মিশিয়ে রাখতে হবে। এবং বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে চলাফেরা করাতে হবে।
ওসিডি রোগের চিকিৎসা
প্রিয় পাঠক একটি ওসিডি রোগ পুরুষ এবং মহিলার দুজনেরই হতে পারে। মূলত এই রোগ ৬ বছর বয়স থেকে শুরু হয়। অর্থাৎ এ রোগটি বয়সন্ধিকালে এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে দেখা যায়। এ রোগের চিকিৎসা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমন- সাইকোলজিক্যাল এবং দ্বিতীয় টি হল ফার্মাকোলজিক্যাল।
এই দুই ধরনের চিকিৎসা দেওয়ার ফলে সাধারণত রোগীকে সুস্থ করা হয়। যে কোন চিকিৎসকের কাছে গেলে অর্থাৎ যারা মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ তাদের কাছে গেলে সাধারণত এই দুই ধরনের চিকিৎসা দিয়ে থাকে। ফলে রোগীকে আগের চেয়ে অনেক সুস্থ দেখায়। এর জন্য ওসিডি আক্রান্ত রোগীকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী উপরোক্ত দুই ধরনের। ট্রিটমেন্ট দিতে পারেন
ওসিডি থেকে মুক্তির দোয়া
প্রিয় পাঠক আমরা উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা আপনাদের ওসিডি রোগের লক্ষণ, ওসিডি কেন হয় এবং ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় সেই সম্পর্কে সমস্ত কিছু আলোচনা করেছি আশা করি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন। এবার প্রতিটি থেকে মুক্তির দোয়া সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলঃ
আরো পড়ুনঃ গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায়
আপনার যদি ওসিডি রোগ হয়ে থাকে তাহলে রোগ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহতালার কাছে নিম্নে লিখিত দোয়াটি বারবার পাঠ করতে থাকুন এবং আল্লাহতালার কাছে দোয়া করতে থাকুন যেমন-
উচ্চারণঃ “ইয়া-হাইয়্যু, ইয়া ক্বায়্যুমু বিরাহামাতিকা আছতাগীছ”
অর্থঃ ‘হে চিরঞ্জীব, চির প্রতিষ্ঠিত সত্তা, আপনার রহমত দ্বারা আপনার কাছে সাহায্য চাই’। ( তিরমিজি- ৩৫২৪ ) আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ যখন চিন্তিত হতেন তাৎক্ষণাৎ এই দোয়াটি পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাইতেন।