অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সঠিক কৌশল ২০২৩

অ্যাসাইনমেন্ট ছাত্র জীবনে বহুল পরিচিত একটি বিষয়। স্কুল লাইফ থেকে শুরু করে ভার্সিটি লাইফের এসাইনমেন্টের সম্পর্কে সবারই জানা আছে। ছাত্রছাত্রীদের কাছে করোনার জন্য অ্যাসাইনমেন্ট সম্মুখীন হতে হয়েছে। এক কথায় আমরা বলতে পারি অ্যাসাইনমেন্ট সবার কাছে একটি পরিচিত বিষয়। কিন্তু আমরা জানি না,কিভাবে অ্যাসাইনমেন্ট করলে ভালো মার্কস পাওয়া যায়।
আমরা অনেক কষ্ট করে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করি, কিন্তু অনেক সময় ভালো মার্কস পাই না। চলুন আমরা জেনে নেই কিভাবে এসাইনমেন্ট করলে ভালো মার্কস পাওয়া যাবে। অ্যাসাইনমেন্ট সঠিকভাবে লেখার নিয়ম কি কি এবং ভালো মার্কস পাওয়া যায় জেনে নেই।

সূচিপত্রঃ

অ্যাসাইনমেন্ট কি

অ্যাসাইনমেন্ট হলো শিক্ষকের কাছে থেকে ছাত্রদের দেওয়া একটি কাজ, এটি নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষক কে জমা দিতে হয়। অ্যাসাইনমেন্ট শেখার অংশ হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সঠিক নিয়ম

আমরা যখন পরীক্ষা দেই তখন অনেক ভালোভাবে পড়াশোনা করি এবং অনেক ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করি, সেই ভাবে এসাইনমেন্ট লিখে ভালো নাম্বার পাওয়ার জন্য অনেক ট্রিকস ব্যবহার করতে হবে। একটু গুরুত্ব দিলেই এসাইনমেন্টে ভালো মার্কস পেতে পারেন। ট্রিক্স গুলো জানতে আর্টিকেলটি সম্পন্ন করুন।

অ্যাসাইনমেন্ট লিখার করণীয়

  • টপিক সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে
  • অ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য প্রচুর রিসার্চ এবং বই পড়তে হবে
  • এসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার সময় ডেট লাইন সতর্ক থাকা
  • এসাইনমেন্ট লেখার পর ভালোভাবে রিভিশন দেওয়া

অ্যাসাইনমেন্ট করার জন্য যেগুলো প্রয়োজন

  • A4 সাইজের কাগজ।
  • পেন্সিল এবং রাবার।
  • স্কেল মার্জিন টানার জন্য।
  • নীল এবং কালো কালির কলম।
  • যে বিষয়ে এসাইনমেন্ট ওই বিষয় সম্পর্কিত বই রিসার্চ করা।
এসাইনমেন্ট করার জন্য আমি প্রত্যেকটি ধাপ তুলে ধরবো আশা করি উপকৃত হবেন।

অ্যাসাইনমেন্ট কভার পেইজ

প্রথমত অ্যাসাইনমেন্ট শুরু করার আগে কভার পেজ তৈরি করতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান কভার পেজ এর ফটোকপি বা প্রিন্ট করে দিয়ে থাকেন, এমন হলে সঠিক তথ্যগুলো দিলেই কাজ শেষ। তাহলে আপনারা নিজেরাই কভার পেইজ তৈরি করতে পারবেন।অনেকে আবার কভার পেজকে বিভিন্ন আকারে ডিজাইন করে থাকে।

অ্যাসাইনমেন্টের জন্য এটি একটি শিক্ষনীয় অংশ। এগুলো করার জন্য অনেক সময় নষ্ট হয়ে থাকে, শিক্ষকরা অনেকে পছন্দ করেন না তখন নাম্বার কম দিয়ে থাকেন। আপনি ভার্সিটি লেভেলের হলে অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষক দেখবেই না। তাই নিজের ট্যালেন্ট দেখাতে যাবেন না কভার পেইজে।

কভার পেজে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা থাকবে

  • নিজের প্রতিষ্ঠানের নাম
  • শিরোনাম
  • নিজের নাম
  • শ্রেণী/সেমিস্টার
  • জমা দেওয়ার তারিখ
  • অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণকারী নাম
  • বিষয়ের নাম এবং বিষয় কোড

অ্যাসাইনমেন্ট কাভার পেজ তৈরি

  • অ্যাসাইনমেন্ট ক্রমিক নং
  • অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম
  • বিষয়ের নাম এবং বিষয়ের কোড
  • শিক্ষার্থীর রোল নম্বর
  • পিতার নাম
  • মাতার নাম
  • শিক্ষার্থীর শাখা/সেমিস্টার
  • জমা দেওয়ার শিক্ষক

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার আগের করণীয়

  • অ্যাসাইনমেন্ট লেখা কাজের আগে অবশ্যই আরো কিছু কাজ জানতে হবে।এগুলো না জানলে আপনার অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করা হবে না। উল্লেখিত বিষয়গুলো দেখুন। শিক্ষার্থীরা এগুলো লক্ষ্য না করলে নম্বর পাবেনা।
  • অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা
  • আপনি সর্বপ্রথম অ্যাসাইনমেন্ট লেখার আগে বই সংগ্রহ করুন। অথবা ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে তথ্যগুলো আলাদাভাবে পয়েন্ট করে অন্য খাতায় সংগ্রহ করুন। তাহলে আপনার অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে সুবিধা হবে।
  • এসাইনমেন্ট লেখার ধরন লক্ষ্য করুন।
  • এসাইনমেন্ট লিখার সময় আপনার হাতের লেখা সুন্দর হতে হবে। সৃজনশীল ভাবে সাজিয়ে লিখুন।
  • পেজের মধ্যে কোন কাটাকাটি না করে সুন্দরভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে লিখুন।
  • খাতাকে সুন্দর করার জন্য নীল কালি ব্যবহার করতে পারেন পয়েন্টগুলো হাইলাইট করেন,এবং বাকি লেখাগুলো কালো বলপেন দিয়ে লিখতে হবে। সাইন পেন ব্যবহার করা যাবে না।
  • কত নাম্বারের উত্তর তা দেখে তো দিতে হবে। এক নাম্বারের উত্তর পাঁচ নম্বরের সমান দিলে এসাইনমেন্টের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। শিক্ষক বুঝতে পারবে আপনি মুখস্ত বিদ্যা লিখেছেন।
  • বানান এবং বাক্য গঠনে কোন ভুল থাকলে লক্ষ্য করে ঠিক করবেন।ধারাবাহিক রক্ষা করে লিখা।
  • উত্তর অনুযায়ী চিত্র অংকন করতে পারেন। এতে অ্যাসাইনমেন্ট এর সৌন্দর্য এবং মান বৃদ্ধি পাবে।
  • অন্য কারো নকল করবেন না, এসাইনমেন্ট দেখে শিক্ষক বুঝতে পারলে নম্বর দিবে না।
  • মার্জিন টানা সময় লক্ষ্য রাখবেন মার্জনে যেন কোন আঁকা বাঁকা না হয়।
  • অ্যাসাইনমেন্ট লেখা শেষে এক্সট্রা পেইজ দিবেন, যাতে লাস্টের পেজের লেখা নষ্ট না হয়। দেখতেও অনেক সুন্দর লাগবে।
  • হাতের লেখা সুন্দর হলে শিক্ষকের অনেক ভালো লাগবে এবং আপনার অ্যাসাইনমেন্ট পড়বে।
  • এসাইনমেন্ট লেখার সময় উদাহরণ দিয়ে উপস্থাপন করবেন,এতে আপনার দক্ষতা ফুটে উঠবে।

লেখা শেষ রিভিশন

প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি যেগুলো এসাইনমেন্টে লিখেছেন, এগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন। যদি কোন অংশে কিছু বাদ থাকে তাহলে যুক্ত করুন। এসাইনমেন্ট লেখার পরে কাগজ সেলাইয়ের সময় এক্সট্রা পেয়ে যুক্ত করার চেষ্টা করুন। তাতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ এসাইনমেন্ট নষ্ট হবে না।

এসাইনমেন্ট লেখার অংশে কি থাকতে হবে

অ্যাসাইনমেন্ট লেখা খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অ্যাসাইনমেন্টকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
  1. ভূমিকা লিখতে হয়
  2. এসাইনমেন্টের মূল অংশ লিখতে হয়
  3. সারসংক্ষেপ বা উপসংহার
অ্যাসাইনমেন্ট লেখার আগে অবশ্যই টু বি পেন্সিল দিয়ে এ ফোর কাগজে মার্জিন টানতে হবে। তারপর অ্যাসাইনমেন্ট লেখা শুরু করবেন। মার্জিন এর বাইরে কোন লেখা যাবে না। পেজের দুই পাশে কখনো লিখবেন না।

ভূমিকা

আপনার এসাইনমেন্ট টি যে বিষয়ে লিখতে হবে, সে বিষয়ে দুই লাইন ধারণা। খুব যদি আপনার ভূমিকা পরে তাহলে বুঝতে পারবে আপনি এসাইনমেন্টের ভিতর কি লিখতে পারেন। তাই যতটা সহজ দুই লাইনে আকর্ষণীয় করে তুলবেন। তাহলে আপনার দক্ষতায় শিক্ষক অনেক আকর্ষিত হবে।

অ্যাসাইনমেন্ট মূল অংশ

আপনার অ্যাসাইনমেন্ট যে বিষয়ে লিখতে বলা হয়েছে ওই বিষয়ে সকল তথ্য বর্ণনা করতে হবে। ওই বিষয়ে বাদে অযৌক্তিকর কোন লাইন যোগ করবেন না। সুন্দরভাবে লিখা এবং ভাষা সাজিয়ে লিখতে হবে। অযথা কোন লাইন লিখলে নাম্বার কাটা সম্ভব না বেশি থাকে। অ্যাসাইনমেন্ট এর ভিতর কঠিন ভাষা ব্যবহার করবেন না। যতটা সম্ভব সহজ ভাষা এবং গুছিয়ে লিখার চেষ্টা করবেন।

শিক্ষক যেন সহজে বুঝতে পারে আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন। স্কুল কলেজ,ভার্সিটি এগুলোতে এসাইনমেন্ট দেওয়ার একমাত্র কারণ সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তাই এসাইনমেন্টের ভেতরে সৃজনশীলতা প্রকাশ করুন।

শেষ কথা

আমি আপনাদের কাছে চেয়েছিলাম এসাইনমেন্টের সকল নিয়মগুলো ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে। আপনি যদি নিয়ম গুলো মেনে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করেন তাহলে আশা করি অবশ্যই ফলাফল ভালো পাবেন। অ্যাসাইনমেন্ট লিখার নিয়ম আলোচনা এখানেই শেষ করছি। আশা করি আপনি আর্টিকেলটি পড়ে অবশ্যই উপকৃত হবেন। আরো আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url