দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে - দাঁতের ফিলিং কত প্রকার

আসসালামু আলাইকুম, আমরা সকলে প্রতিনিয়ত দাঁতের সমস্যায় ভুগে থাকি। আমাদের অনেকে আছে যাদের দাঁত পোকাতে খেয়ে ফেলেছে। তাই আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে এবং দাঁতের ফিলিং কত প্রকার সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাকে ভালো রাখতে হলে দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে সেটি জেনে রাখা আপনাদের আবশ্যক।
প্রিয় পাঠক চলুন আর দেরি না করে আমরা নিম্নে জেনে নেই দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে এবং দাঁতের ফিলিং কয় প্রকার হয়ে থাকে সকল কিছু বিস্তারিত। যা আপনাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

সূচিপত্রঃ দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে

ভূমিকাঃ দাঁতের ফিলিং কত প্রকার

দাঁত আমাদের একটি প্রয়োজনীয় অঙ্গ যা মুখের ভেতরে থাকে। দাঁত আমাদের বিভিন্ন খাবারের জিনিস খাইতে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে আমরা যদি দাঁতের কোনরকম অযত্ন করা যাবে না। আপনারা যদি দাঁতের অযত্ন করেন তাহলে অল্পদিনেই দাঁত নষ্ট হয়ে যাবে এক্ষেত্রে আপনি কোন রকমের শক্ত কিছু খেতে পারবেন না। বর্তমান সময়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় দাঁত এ পোকা লাগার কারণে দাঁতের মাঝে ফাঁকা সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুনঃ কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

ফাঁকা হওয়ার কারণে আমরা দাঁতে ব্যথা অনুভব করি এবং কোন কিছু ঠিকমতো খেতে পারি না। এই ক্ষেত্রে আমরা যদি ঠিক সময় কোন ডেন্টেস্টের পরামর্শ না গ্রহণ করি তাহলে পরবর্তীতে আমাদের দাঁত নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। দাঁত ফাঁকা হয়ে গেলে অর্থাৎ পোকাতে খেয়ে নিলে আমরা সাধারণত দাতে পুডিং বা ফিলিং করে থাকি।

এই ক্ষেত্রে দাঁত আগের অবস্থায় না আসলেও কিছুটা ব্যাথা থেকে স্বস্তি পাওয়া যায় এবং আমরা সব ধরনের খাবার খেতে পারি। আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে এবং দাঁতের ফিলিং কত প্রকার সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব,নিম্নে তা দেওয়া হল।

দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে

দাঁত ফিলিং করার আগে সর্বপ্রথম যে দাঁত ফিলিং করা হবে সেই দাঁতটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর দাঁতের ভেতরে গর্তের মধ্যে জমে থাকা ময়লা গুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর সেখানে ডাক্তার দেখেশুনে অস্থায়ী ফিলিং করে দেয়। অস্থায়ী ফিলিং করে দেওয়ার পর সেখান থেকে রোগীকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে দেয় এবং রোগীকে আবার ফিলিং করার দুই থেকে তিনদিন পরে আসতে বলে তারপর অস্থায়ী ফিলিং তুলে স্থায়ী ফিলিং করে দেয়। 

স্থায়ী ফিলিং করার জন্য ঠিক আগের মতই দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং দাঁতের গর্তে ফিলিং করার মেটেরিয়ালস গুলো সুন্দরভাবে লাগিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে কিছু সময়ের মধ্যেই ফিলিং করা হয়ে যায়। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে এক্ষেত্রে আপনারা আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন যখন আপনার দাঁতে আপনি কোন ডেন্টেস্টের কাছে গিয়ে ফিলিং করান। সুতরাং আমরা সবাই দাঁতের যত্ন নিই।

দাঁতের ফিলিং কয় প্রকার

প্রিয় পাঠক উপরোক্তা আলোচনার মাধ্যমে আমরা দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি এবার আমরা জানাবো তাদের ফিলিং কয় প্রকার। যেগুলো আপনাদের জেনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দাঁত কে যত্নে রাখতে। নিম্নে দাঁতের ফিলিং কয় প্রকার দেওয়া হলঃ

প্রিয় পাঠক দাঁতের ফিলিং সাধারণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে নিম্নে তা দেওয়া হলোঃ

অস্থায়ী ফিলিং বা টেম্পোরারি ফিলিং
অস্থায়ী ফিলিং বলতে আমরা সাধারণত জিংক অক্সাইড ফিলিং টাকে বুঝে থাকি। এই ফিলিং টি সাধারণত সাধারণের দেখতে হয় আবার অনেক জন এটি চুনের মত দেখতে বলে থাকে। এই ফিলিং টি সাধারণত আমাদের দেশে অনেক বেশি ব্যবহৃত হয়। 

এই ফিলিং টি সাধারণত তাদের দাঁতে ব্যবহার করা হয় যাদের দাঁতে ছোট গর্ত হয়েছে এবং হালকা দাঁত সিরসির করে তাদের সাধারণত এই ফিলিং টি করা হয়। আপনি যদি এ অবস্থায় কোন ডাক্তারের কাছে যান তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথম এই অস্থায়ী ফিলিং টি করে দিবে।

আরো পড়ুনঃ কিডনি পাথরের লক্ষণ - কিডনিতে পাথর হলে কি খাওয়া যাবে না

স্থায়ী ফিলিং বা পার্মানেন্ট ফিলিং
স্থায়ী ফিলিং বলতে আমরা এস ডি আই এডমিক্স ফিলিং কে বুঝি। সাধারণত এই ফিলিং টি সকলে সিলভার ফিলিং বলে থাকে। এই ফিলিং টি অনেক টেকসই এবং শক্ত। দাঁতের গর্তে এই ফিলিং টি ৫ থেকে ১০ বছর থাকলেও তেমনভাবে ক্ষয় হয় না। তবে বর্তমান সময়ে এই ফিলিং টি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়ে পড়েছে। 

বর্তমান সময়ে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাদের হার্টের রোগ রয়েছে তাদের এই ফিলিং টি করলে অনেক বেশি ক্ষতি হয়। এর জন্য ডেন্টিস্ট রা ই ফিলিং টির ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে এবং অন্যান্য যে স্থায়ী ফিলিং গুলো আছে সেগুলো ব্যবহার করে থাকে। সুতরাং পরিশেষে বলা যায় উপরোক্ত এই দুইটি ফিলিং ব্যবহার করা হয়।

দাঁতের ফিলিং করার কত বছর স্থায়ী

 দাঁতে সাধারণত দুইটি ফিলিং ব্যবহার করা হয় সেগুলো হল-জিংক অক্সাইড ফিলিং এবং দ্বিতীয় টি হল সিলভার অ্যামালগাম কপার অ্যামালগাম। চলুন আমরা এ আর্টিকেলের মাধ্যমে নিম্নে জেনে নেই উপরোক্ত দুটি ফিলিং কত বছর দাঁতে স্থায়ী থাকে, নিম নেতা দেওয়া হলোঃ

জিংক অক্সাইড ফিলিং
জিংক অক্সাইড ফিলিং মূলত এটি একটি নরমাল ফিলিং। এই ফিলিং টি সাধারণত নরমাল হিসেবে দাঁতে ব্যবহার করা হয়। ঝিংক অক্সাইড ফিলিং টি মূলত দাঁতের রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্টের সময় ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ছোট ছোট বাচ্চাদের দাঁতে এই অস্থায়ী ফিলিং টি ব্যবহার করা হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে বড়দের দাঁতে এই অস্থায়ী ফিলিং টি ব্যবহার করা হয় কিন্তু এর কোন গ্যারান্টি থাকেনা। এই ফিলিং টি সাধারণত কোন ক্ষেত্রে ৬ থেকে ১ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।

সিলভার অ্যামালগাম কপার অ্যামালগাম
সিলভার অ্যামালগাম এবং কপার অ্যামালগাম এই ফিলিং টি অনেক ভালো মানের মেটেরিয়াল থাকায় প্রায় ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে সক্ষম। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ফিলিং টি আরো অনেক বেশি দিন পর্যন্ত টিকে থাকে। এই ফিলিং টি সাধারণত বড়দের ক্ষেত্রে করানো হয়।

দাঁতের ফিলিং খরচ কত

প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো এতক্ষণে দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে এবং ফিলিং কত প্রকার ও ফিলিং কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের ফিলিং খরচ কত? আমরা অনেকেই আছি যারা দাঁতের ফিলিং খরচ কত সেই সম্পর্কে জানিনা। দাঁতের ফিলিং খরচ কত তা নিম্নে দেওয়া হলোঃ

আপনি দাঁতে কোন ধরনের ফিলিং করবেন সেই অনুযায়ী আপনার খরচ হবে। আপনি যদি অস্থায়ী ফিলিং করেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে ফিলিং করা একটু খরচ কম আবার আপনি যদি স্থায়ী বা ভালো মানের ফিলিং করেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে খরচটা একটু বেশি হবে। সাধারণত দাঁতের ফিলিং খরচ ১৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

দাঁত ফিলিং এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

দাঁতের ফিলিং করাটা যেমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেই ক্ষেত্রে দাঁতের ফিলিং করাটাও অনেক ক্ষতিকর। আপনারা শুনে অবাক হবেন যে দাঁতের ফিলিং করালে ফিলিং এর যে পারদ থাকে সেই পারদ দাঁতের রক্তের সাথে মিশে পেটে চলে যায়। রক্তে মিশে যাওয়ার ফলে সৃষ্টি হয় মস্তিষ্কের সমস্যা, হার্ট, ফুসফুসের সমস্যা এবং কিডনির সমস্যা। শরীরের ভেতরে কমে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এতে করে বোঝা যায় ফিলিং করার ফলে মানুষ দেহে বিপদ আরও বাড়ছে।

আরো পড়ুনঃ ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় - ওসিডি কেন হয়

তবে ১ থেকে ২ বার দাঁত ফিলিং করালে তেমন কোন সমস্যা হয় না যদি তার বেশি দাঁত ফিলিং করানো হয় সে ক্ষেত্রে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। এক্ষেত্রে গবেষকরা বলছে, পারদহীন কম্পোজিট রিসিনস দিয়ে দাঁত ফিলিং করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এখানেও সমস্যা বা বিপদ হতে পারে। রেসিনস থেকে খুব অল্প পরিমাণ বিসফেনল A নির্গত হয়ে থাকে এই ক্ষেত্রে শরীরবৃদ্ধি কিংবা প্রযোজন প্রক্রিয়া ওপর কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।

শেষ কথাঃ দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে

পরিশেষে বলা যায় আমরা এই পুরো পোষ্টের মধ্যে দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে এবং ফিলিং কত প্রকার ও কি কি সেই সম্পর্কে সকল কিছু বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা সকল কিছু বুঝতে পেরেছেন। ফিল্ডিং করার পাশাপাশি আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে যেন শরীরের বেশি ক্ষতি না হয়। দাঁতকে সুস্থ রাখতে এবং ভালো রাখতে দাঁতের যত্ন নেওয়াটাই আবশ্যক। আমাদের এই পোস্টটি পাওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url