কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আমরা অনেক মেয়েরা আছি যারা মাসিকের নানা সমস্যায় ভুগি। আমরা আজকের পোষ্টের মাধ্যমে কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় এবং দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। কি কি কারনে মাসিক দেরিতে হয় বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের পোস্টটি পুরোটি পড়ুন।
চলুন আর দেরি না করে আমরা নিম্নে জেনে নিই কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় এবং দ্রুত যেন মাসিক হয় সেই উপায় সম্পর্কে। নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হলো।

সূচিপত্রঃ কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয়

কি কি কারনে মাসিক দেরিতে হয়

প্রিয় পাঠক আমরা যারা মেয়েরা আছি তাদের অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য মাসিক দেরিতে হয়। এটি একটি চিন্তার বিষয় হলেও বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করে ঠিক করে নেওয়া যায়। তবে আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। নিম্নে কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় তা দেওয়া হলঃ

আরো পড়ুনঃ কিডনি পাথরের লক্ষণ - কিডনিতে পাথর হলে কি খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় মাসিক দেরিতে হয়
আপনি যদি দেখেন মাসিক বেশ কিছুদিন ধরে হচ্ছে না তাহলে সর্বপ্রথম আপনি নিশ্চিত হন আত্মসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন কিনা। কেননা আত্মসত্ত্বা হয়ে পড়লে মাসিক দেরিতে হয়।

বয়সের কারণে মাসিক দেরিতে হয়
অনেক সময় প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ার কারণে মাসিক দেরিতে হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। বেশিরভাগ টিনেজ বয়সী এবং মধ্যবয়সী নারীদের ভেতরে মাসিক না হওয়ার এই অনিয়মিত সমস্যাটি হয়ে থাকে। এটি হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে হরমোন জনিত কারণ। হরমোনের কারণে মাসিক দেরিতে হয়।

ওজন কম থাকলে মাসিক দেরিতে হয়
প্রিয় পাঠক আমরা যারা মেয়েরা আছি তাদের যদি বয়স এর তুলনায় একজন কম থাকে তাহলে সাধারণত মাসিক দেরিতে হওয়ার সমস্যাটি দেখা দেয়। ওজন কম হওয়ার কারণে মাসিক কয়েকদিন দেরিতেও হতে পারে।

হরমোনাল বার্থ কন্ট্রোল
আপনি যদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলে অনেক সময় মাসিক দেরিতে হয়। যেমন আপনি যদি পিল, প্যাচ,আইউডি এবং ইনজেকশন ব্যবহার করেন তাহলে এগুলোর প্রতিক্রিয়ার কারণে মাসিক বেশ কয়েকদিন পরে হতে পারে। এগুলো ব্যবহারের ফলে শারীরিক পরিবর্তন ঘটে বেশ কিছু।

ফাইব্রয়েড
ফাইব্রয়েড হল জরায়ুতে টিউমারের মত এক ধরনের বৃদ্ধি যা স্বাভাবিক পিরিয়ড চক্রকে বাধা দেয়। এর জন্য অনেক সময় দেরিতে পিরিয়ড হয়।

শারীরিক সমস্যা
মনোনিউক্লিওসিস, সর্দি, জ্বর, ঠান্ডা লাগা, গলা ইনফেকশন এই সমস্ত সমস্যা দেখা দিলে বা হলে পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে। আবার যদি শারীরিক কোন বড় সমস্যাও দেখা দেয় সেই ক্ষেত্রেও পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে।

প্রিয় পাঠক আশা করি উপরোক্ত কারণগুলো পড়ে এতক্ষণে আপনারা বুঝে গেছেন কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয়। উপরোক্ত কারণগুলো যদি আপনার শরীরের মধ্যে দেখেন বা অনিয়ম করে চলেন তাহলে মাসিকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। সুতরাং উপরোক্ত আলোচিত কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সেগুলো আপনার জেনে রাখা উচিত।

দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

প্রিয় পাঠক আমরা উপুক্ত আলোচনার মাধ্যমে কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এবার আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে দ্রুত মাসিক হওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে তা দেওয়া হলঃ

শারীরিক ব্যায়াম করা
আপনারা যারা মেয়েরা আছেন তারা যদি নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করেন তাহলে মাসিক না হওয়ার সমস্যাটা আর থাকে না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নির্দিষ্ট কয়েকটি ব্যায়াম আছে সেগুলো যদি আপনি করেন তাহলে মাসিক এর সমস্যা আর থাকবে না।

টক জাতীয় ফল খাওয়া
আপনারা মেয়েরা যারা মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা ত্বক জাতীয় খাদ্য যেমন-মাল্টা, তেতুল, জলপাই এই ধরনের টক জাতীয় ফলগুলো খেলে নিয়মিত মাসিক হতে সাহায্য করবে। একটি গ্লাসে এক গ্লাস পানি নিয়ে তেতুল প্রায় এক ঘন্টার মত ভিজিয়ে রাখুন। এরপর তেতুল মেশানো সেই পানির ভেতরে চিনি, লবণ এবং কিছু পরিমাণ জিরা গুড়া মিশিয়ে দিনে দুইবার পান করুন। এতে দেখবেন অনিয়মিত মাসিক এর সমস্যাটা চলে যাবে।

তিল খাওয়া
তিল একটি বিশেষ ঔষধি গুণ জাতীয় খাদ্য। তিল আমাদের শরীরের ভেতরে হরমোন উৎপাদন করে এর জন্য তিল খাওয়ার ফলে অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত হওয়া শুরু করে। অল্প পরিমাণ তেল নিয়ে ভেজে নিন। এরপর ভাজা তিল গুলো গুঁড়ো করে নিন এরপর গুড়ো তিল এর মধ্যে এক চামচ গুড় মিশিয়ে এটি প্রতিদিন খালি পেটে সেবন করুন। এটি খাওয়ার ফলে অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত হওয়া শুরু করে।

আদার ব্যবহার
আদা একটি ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ খাবার। আদা অনিয়মিত মাসিক চক্রকে নিয়মিত মাসিক চক্র করতে সাহায্য করে। আপনি বাড়িতে এক কাপ পানির ভেতরে ১/২ চামচ আদা কুচি দিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট সিদ্ধ করে নিবেন। পরবর্তীতে এটি পানিতে মিশিয়ে খাবার পর তিন বেলা পান করবেন। এটি নিয়মিত এক মাস পান করার ফলে আগের চেয়ে ভালো ফলাফল পাবেন।

স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন
যে সকল নারীদের মেনোপজ এর বয়স হয়ে গিয়েছে তাদেরকে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা বেশি প্রয়োজন। কেননা মেনোপজের পরই অনেক ধরনের রোগে আক্রান্ত বা প্রকোপ বাড়তে পারে। এর জন্য প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করার চেষ্টা করুন।

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ

প্রিয় পাঠক আমরা অনেক নারীরা আছি যারা মাসিকের সমস্যায় ভুগে থাকি। কারো অনেক তাড়াতাড়ি মাসিক হয় আবার কারো অনেক দেরি করে মাসিক হয়। আবার কারো এক মাস দুই মাস পরেও মাসিক হয়। যখন একটি নারীর দুই মাস পরে মাসিক হয় সেহুতু তার জন্য সে বিষয়টি ক্ষতিকর। তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। নিম্নে তা দেওয়া হলোঃ

আরো পড়ুনঃ ওসিডি রোগের ঔষধ কত দিন খেতে হয় - ওসিডি কেন হয়

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
সাধারণত নারীদের মাসিক হওয়ার কারণ হিসেবে হরমোন সকল কিছু অর্থাৎ হরমোন মাসিক চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার হরমোন যেকোনো চক্রকে ভারসাম্যহীনতা ব্যাহত করতে পারে। প্রাথমিক ভাবে যে দুটি হরমোন মাসিক নিয়ন্ত্রণ করে সেই দুটি হরমোন হলো-ইট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন।

সাধারণত যখন শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থাকে তখন শরীর ডিম্বস্ফাটন করতে পারে না এর ফলে মাসিকের অনুপস্থিতি দেখা দেয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার বেশ কিছু কারণ রয়েছে যেমন থাইরয়েডের সমস্যা, পলিস্টিক ওভারি সিড্রোম ও পিটুইটারি গ্রন্থের ব্যাধি।

মেনোপজ
মেনোপজ হলো একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা নারীদের মধ্যে ৪০ বছরের শেষের দিকে এবং 50 বছরের প্রথমের দিকে ঘটে থাকে। সাধারণত মনোপজ এর জন্য শরীরের ভেতরে ধীরে ধীরে মাসিকের জন্য পাওয়ার মন তৈরি করা বন্ধ করে দেয় যার ফলে মাসিক স্থায়ীভাবে হয় না। এর জন্য দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ এটি একটি ধরতে পারেন।

ওজনের ওঠানামা
ওজন বৃদ্ধি এবং ওজন হ্রাস দুটোই মাসিক চক্রে প্রবাহিত করতে পারে। কম বডি মাস ইনডেক্স সহ মহিলাদের ইস্ট্রোজেনের কম মাত্রার কারণে ডিম্বস্পটন ও ঋতুস্রাবের অভাব অনুভব করতে পারে। যাদের অধিক পরিমাণে বিএমআই আছে তারা অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেনের কারণে অনিয়মিত মাসিক অনুভব করতে পারে।

শরীর স্ট্রেস
শরীরে স্টেস থাকার কারণে মাসিক চক্রের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের শরীরে যখন বেশি চাপের মধ্যে থাকে তখন আমাদের শরীরে কার্টিসল তৈরি হয় যা অন্যান্য হরমোনের উৎপাদনকে ক্ষতি করতে পারে। সাধারণত এর ফলে অনিয়মিত মাসিক চক্র প্রভাবিত হতে পারে।

চিকিৎসা শর্ত
একজন নারী কিছু কিছু চিকিৎসার মাধ্যমে তার পিরিয়ড মিস করতে পারে যেমন-থাইরয়েড এর সমস্যা গুলো হর মনের উৎপাদনকে প্রবাহিত করতে পারে যার ফলে মাসিক নিয়ন্ত্রণ করে, যখন ডায়াবেটিক স শরীরের হরমোন কে ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে। এর ফলেও টানা দুই মাস মাসিক নাও হতে পারে।

মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা আপনাদের কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় এবং দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করি কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সেই সম্পর্কে আপনারা এতক্ষণে ধারণা পেয়ে গেছেন। আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে তা দেওয়া হলোঃ

সাধারণত একটি নারী যখন একটি পুরুষের সাথে মেলামেশায় জড়িয়ে পড়ে তখন পুরুষের শুক্রাণু এবং নারীর ডিমানোর সাথে নিষিদ্ধ হয়। নারীর যৌনিপথের ফ্যালোপিয়ান নামক টিউবে এই নিষিদ্ধ ডিমানো ও শুক্রাণু সংযুক্ত হওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে নারী এখন গর্ভধারণ করেছে। এর ফলে নারীর যত কন্যা গর্ভের সন্তান প্রসব করছে ততক্ষণ আর কোন পিরিয়ড বা মাসিক হবে না। এর ফলে একটি নারীর যদি মাসিক না হয় তাহলে ধরে নেওয়া হয় যে মেয়েটি গর্ভবস্থায় আছে।

তবে এই ক্ষেত্রে অন্য কোন কারণে ও মাসিক না হওয়ার সমস্যা থেকে থাকে। এর জন্য কি কারণে মাসিক হচ্ছে না সেই কারণ শনাক্তকরণের জন্য যেকোনো একটি গাইনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ গ্রহণ করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। আপনারা যদি গর্ভধারণের প্রধান লক্ষণ হিসেবে মাসিক বন্ধ হওয়াকে বুঝে থাকেন তাহলে শুনে রাখুন গর্ভঅবস্থার আরো বেশ কিছু প্রাথমিক কারণ বা লক্ষণ রয়েছে। একটি নারী যখন গর্ভধারণ করতে যায় তখন তার শরীরে নানা ধরনের সমস্যার দেখা দেয়। এক্ষেত্রে বোঝা যায় মাসিক না হলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মাসিক না হওয়ার ঔষধ

প্রিয় পাঠক আমরা অনেক নারীরা আছি যাদের মাসিক একেবারেই হয় না আবার অনেক নারীরা আছে যাদের ঘন ঘন মাসিক হতে থাকে। তাহলে হয়তো বা আপনি বুঝতে পারছেন মাসিক হওয়াটা যতটা জরুরী এবং মাসিক নিয়মিত হওয়াটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবার মাসিক যদি অনিয়মিত হয় অর্থাৎ ঘন ঘন হয় তাহলে সেটিও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আপনারা যারা নারীরা আছেন এবং যাদের ঘন ঘন মাসিক হয় তারা যদি ঘন ঘন মাসিক থেকে রক্ষা পেতে চান তাহলে Phasic Pill এই ওষুধটি নিয়মিত সেবন করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ খিচুনি রোগের লক্ষণ - খিচুনি রোগের ঘড়োয়া চিকিৎসা

এই ওষুধগুলোর গায়ে সাধারণত দুই থেকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেকটি ওষুধের গায়ে আলাদা আলাদা রঙ্গে চিহ্ন দেওয়া থাকে। সাধারণত এই ওষুধটি ভিন্ন ভিন্ন হরমোনের ও কাজ করে থাকে। এই ওষুধটি সাধারণত ২১ দিনের কোর্স করা হয়ে থাকে। এটি সাধারণত সাত দিন পর পর খেতে হয়। আবার আপনি যদি মাসিক যেন অনেক তাড়াতাড়ি না হয় সেটি জান তাহলে মিনিপিল এই ট্যাবলেটটি খেতে পারেন। তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো কোন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন।

শেষ কথাঃ কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয়

প্রিয় পাঠক পরিশেষে বলা যায় আশা করি আপনারা কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় এবং মাসিক দ্রুত হওয়ার উপায় সম্পর্কে সকল কিছু বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনাদের বাড়িতে অবশ্যই আপনার মা-বোন আছে উপরোক্ত বিষয়গুলো অবশ্যই তাদের ভেতরে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকে বুঝিয়ে বলবেন। মাসিক হওয়াটাও যেমন জরুরী আবার অতিরিক্ত হওয়াটাও তেমন ক্ষতিকর। আমাদের এই পোস্টটি পাওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url