কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ - কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয়
সূচিপত্রঃ কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ
ভূমিকাঃ কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয়
প্রিয় পাঠক আমাদের শরীরের একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কিডনি। যেতে ছাড়া মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। কিডনিতে যদি কোন রকমের সমস্যা হয় তাহলে সেটি অবহেলা করবেন না কারণ কিডনিতে কোন রোগের সংক্রমণ দেখা দিলে এটি সবচেয়ে বড় ধরনের সমস্যা। আমাদের শরীরে থাকা এই কিডনি যদি একবার অকেজো হয়ে যায় তাহলে আমাদের পুরো শরীর অকেজো হয়ে যাবে অর্থাৎ আপনি ভালোভাবে হাঁটাচলা করতে পারবেন না, খাওয়া দাওয়া করতে পারবেন না এমনকি কোন ধরনের যোগ ব্যায়াম করতে পারবেন না।
আরো পড়ুনঃ কিডনিতে পাথর হলে কি সমস্যা হয় - কিডনি ভালো রাখার খাদ্য
এর জন্য আমাদের সকলেরই উচিত আমাদের কিডনিকে ভালো রাখা। এবং যেসব খাবার গুলো গ্রহণ করলে কিডনি অনেক তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায় অর্থাৎ ইনফেকশন হয়ে যায় সেই খাবারগুলো পরিত্যাগ করা। আমাদের দেশের মানুষ বেশিরভাগ ভেজাল খাবার খাওয়ার জন্য কিডনির সমস্যায় ভোগে। এর জন্য আপনিও যত সম্ভব ভেজালমুক্ত খাবার গ্রহণ করুন এবং ভেজাল যুক্ত খাবার পরিত্যাগ করুন। এতে শরীর এবং মন দুটোই ভালো থাকবে।
আপনারা অনেকেই কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে জানেন না। এর জন্য আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। পুরো পোস্টে পড়লে আপনারা সকল কিছু বুঝতে পারবেন।
কিডনি ব্যথার লক্ষণ
প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো অনেকেই কিডনির ব্যথায় ভুগেন। যেটি হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়। যদি এই ব্যথার লক্ষণ যদি আপনি আগে থেকেই বুঝতে পারতেন তাহলে কেমন হতো। চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে অর্থাৎ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কিডনি ব্যথার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে কিডনি ব্যথার লক্ষণ দেওয়া হলোঃ
- প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হয়
- জ্বর এবং বমি
- বমি বমি ভাব
- অসুস্থতা বোধ
- মল ত্যাগ সমস্যা
- প্রস্রাবে রক্ত বের হওয়া
- মুখে অবসাদ
- মাথা ঘোরা
- শরীরে হঠাৎ ঠান্ডা লাগা
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
- দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বের হওয়া
প্রিয় পাঠক উপযুক্ত কারণগুলো অর্থাৎ লক্ষণগুলো যদি আপনি আপনার শরীরে দেখতে পান তাহলে এটি কিডনি ব্যথা হওয়ার লক্ষণ ধরে নিতে পারেন। কারণ উপরোক্ত লক্ষণগুলো দ্বারা কিডনি ব্যথার লক্ষণ বোঝানো হয়। এর জন্য উপরোক্ত কারণগুলো যদি দেখতে পান তাহলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। এতে আপনার শরীরের ঝুঁকি কম থেকে যাবে।
কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ
প্রিয় পাঠক কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংক হয় আমাদের সকলেরই উচিত কিডনিকে বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচিয়ে রাখা। এর জন্য আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কিডনি ইনফরমেশনের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। নিম্নে কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ দেওয়া হলোঃ
উচ্চমাত্রায় জ্বর হওয়া
কিডনিতে যদি ইনফেকশনের সৃষ্টি হয় তাহলে হঠাৎ করে উচ্চমাত্রায় জ্বর দেখা দেয় শরীরে। যা অত্যন্ত এবং গুরুতর একটি খারাপ অনুভূতি। কিডনিতে যদি ইনফেকশনের সৃষ্টি হয় তাহলে হঠাৎ করে 101 ডিগ্রি ফারেনহাইট এর ওপরে জ্বর চলে আসে শরীরে।
প্রস্রাবে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
প্রস্রাব করতে গিয়ে যদি আপনি অনুভব করতে পারেন যে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করছে, ঘন ঘন প্রস্রাব হচ্ছে, প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব হচ্ছে এবং প্রস্রাবে রক্ত বের হচ্ছে তাহলে বুঝে নিতে হবে কিডনিতে ইনফেকশন হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কিডনি পাথরের লক্ষণ - কিডনিতে পাথর হলে কি খাওয়া যাবে না
বমি হওয়া এবং বমি বমি ভাব
কিডনির সমস্যায় রোগীদের বেশিরভাগ বমি বমি ভাব হয় এবং বমি ও করে। আবার এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে এটি ব্যথার লক্ষণ।
ফ্লাঙ্ক পেইন
ফ্লাঙ্ক পেইন হচ্ছে পিঠে বা পাশে ব্যথা করা। এই ধরনের ব্যথার উপসর্গ গুরুতর এবং স্থায়ী হতে পারে। যা কিডনিতে সমস্যা হওয়ার লক্ষণের মধ্যে একটি।
উপরোক্ত কারণগুলো ছাড়াও শরীরে ক্লান্তি ভাব হতে পারে, পেটে ব্যথা, হঠাৎ ঠান্ডা লাগা বা শরীর ঘেমে যাওয়া, পেটের কমলতা, দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস বের হওয়া ইত্যাদি এ ধরনের কারণ গুলো দ্বারা কিডনির সমস্যা হয়েছে বোঝানো হয়। এর জন্য আপনারা যদি এ ধরনের সমস্যা গুলো দেখতে পান তাহলে নিকৃষ্ট কোন কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।
কিডনিতে ইনফেকশন হলে কি করনীয়
প্রিয় পাঠক আমরা উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবার আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বাড়িতে কিভাবে অর্থাৎ ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে কিডনিতে ইনফেকশন হলে ভালো করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে কিডনিতে ইনফেকশন হলে কি করনীয় তা দেওয়া হলঃ
পানি পান
আপনি যদি কিডনিতে ইনফেকশন হয়েছে বুঝতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখা লাগবে। পানির পরিমাণ ঠিক রাখা লাগবে কারণ শরীরের ভেতরে থাকা পানির মাধ্যমে কিডনি থেকে টক্সিন সংক্রামক উপাদান গুলো বের হয়ে যায়। এর জন্য প্রতিদিন নিয়মিত ৮ গ্লাস পানি পান করুন।
হলুদের ব্যবহার
আদিম যুগ থেকে হলুদের ব্যবহার অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ কমাতে আদিম যুগ থেকে এর ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। কিডনিতে ইনফেকশন হলে হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে থাকে। আদতে রয়েছে কারকিউমিনে এন্টিফাঙ্গাল উপাদান। এই উপাদানগুলো মাইক্রোব তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে যা কিডনি ইনফেকশনের জন্য দায়ী। এর জন্য প্রতিদিনের রান্নায় পরিমাণ মতো হলুদ ব্যবহার করা উচিত এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে রান্নায় যেন হলুদ এর পরিমাণ বেশি না হয় কেন না হলুদের পরিমাণ বেশি হলে কিডনিতে পাথর হয়ে যেতে পারে।
আদার ব্যবহার
মানবদেহের কিডনির ইনফেকশন দূর করতে আদাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আদাতে রয়েছে জিনজেরোলস ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক উপাদান। এর জন্য প্রতিদিন চায়ের সাথে কয়েক টুকরো আদাযুক্ত করে খেতে পারেন আবার আদার টুকর চিবিয়েও খেতে পারেন। তবে সকলকে মনে রাখতে হবে দিনে ৪ গ্রামের বেশি আদা খাওয়া যাবেনা। এর অধিক আধা খেলে শরীরের জন্য আরো ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। আপনাদের যাদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগ রয়েছে তারা অবশ্যই আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
রসুনের ব্যবহার
কিডনির ইনফেকশন দূর করনে রসুন বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ রসুনের ভেতরে রয়েছে অ্যালিসিনে ব্যথা নিরসন, এন্টিফাঙ্গাল এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। প্রতিদিন আপনাদের খাদ্য তালিকায় রসুন রাখুন এবং প্রতিদিন দুই থেকে তিন কোয়া রসুন খান। এতে কিডনিতে হয় ইনফেকশন দূর করার গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য করবে।
অ্যালোভেরার ব্যবহার
কিডনি রোগ দূর করনে অ্যালোভেরা বেশ কার্যকর একটি উপাদান। অ্যালোভেরা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এর জন্য প্রতিদিন আপনারা এক গ্লাস করে অ্যালোভেরার জুস অর্থাৎ রস পান করুন। সামান্য একটু অ্যালোভেরা নিয়ে দুই গ্লাস পানির মধ্যে ভালো করে মিক্সিং করে পান করুন। তবে আপনাদের সকলকে মনে রাখতে হবে অ্যালোভেরা বেশি পরিমাণ খাওয়া যাবে না এতে উল্টো কিডনিতে আরো বেশি সমস্যা হতে পারে।
কিডনি ইনফেকশনের টেস্ট
প্রিয় পাঠক আপনি যদি আপনার কিডনিতে ইনফেকশন হয়েছে তা বুঝতে পারেন অথবা আপনি এখনোই শিওর না যে আপনার কিডনিতে ইনফেকশন হয়েছে তাহলে আপনি যেকোনো একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ গিয়ে কিডনি বিষয়ক ভালো ডাক্তারের কাছে পরামর্শ গ্রহণ করে কিডনির ইনফেকশনের টেস্ট করাতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ স্থায়ী মোটা হওয়ার ঔষধ - মোটা হওয়ার সবচেয়ে ভালো ঔষধ
এখনকার সময়ে দুই ধরনের টেস্ট করলে কিডনির কোন সমস্যা আছে কি না তা ভালোভাবে বোঝা যায়। এর জন্য কোন ধরনের সমস্যা অর্থাৎ শরীরে সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে টেস্ট করাতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url