মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং - মুখে বলে বাংলা লেখা

অনেক মানুষ আছে যারা কিবোর্ডে টাইপিং করতে অনেক বিরক্ত বোধ করে। কিবোর্ডে টাইপিং করতে অনেক সময় ব্যয় হয়ে যায় এর জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টটিতে কিভাবে মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং এবং মুখে বলে বাংলা লেখা লিখবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। যারা কোন ঝামেলা ছাড়াই এবং কম সময়ে লিখতে চান তারা মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং এবং মুখে বলে বাংলা লেখা নিয়ম সম্পূর্ণ পড়ুন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনারা কিভাবে মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং এবং মুখে বলে বাংলা লেখা লিখবেন। মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং ও মুখে বলে বাংলা লেখা কিভাবে লিখবেন সেই সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

সূচিপত্র

মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং ভূমিকাঃ

আপনি যদি কিবোর্ড এ লেখালেখি করেন তাহলে অনেক ধরনের ভুল ভ্রান্তি হয়ে যায়। এর জন্য নিজেকে অনেক বিরক্তবোধ মনে হয়। এই বিরক্তি কমানোর জন্য এবং নির্ভুল ভাবে ও দ্রুত গতিতে টাইপিং করতে আজকের এই পোস্টটিতে মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং ও মুখে বলে বাংলা লেখা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। অনেকে আছে যারা মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং করে অনেক দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে লেখালেখির কাজ করে। আপনারা যারা কম্পিউটারের ভয়েজ টাইপিং সম্পর্কে জানেন না তারা আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন।

বর্তমান সময়ের ব্যবধানে আমরা অনেক ধরনের প্রযুক্তি দেখেছি। যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন কাজে অনেক সাহায্য করে আসছে। আগে এমন একটি সময় ছিল সেই সময়ে শুধু ইংরেজিতে লেখা যেত বাংলা লেখার কোন প্রযুক্তি ছিল না। তারপর আস্তে আস্তে সময়ের ব্যবধানে আমাদের এই বাংলা ভাষা টাইপিং জগতে স্থান লাভ করে। এর ফলে আমাদের জীবন এখন অনেকটাই সহজ হতে শুরু করেছে। বর্তমান সময়ে আর সময় নষ্ট করে কিবোর্ডে লেখার প্রয়োজন পড়ে না কারণ বর্তমান সময়ে অনেক ধরনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন হয়েছে যেগুলো আমাদের মুখে বললেই লেখালেখির কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। 

আরো পড়ুনঃ মোবাইলে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার - সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ডাউনলোড

আগের মত আর আমাদের কিবোর্ড টিপে লেখালেখি করার প্রয়োজন পড়বে না। বর্তমান সময়ে ইস্মার্ট ফোন বা   মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং এ মুখ দিয়ে যা বলা হচ্ছে সেই কথাগুলো লিখিত আকারে প্রকাশ পাচ্ছে। এটি হলো সম্পন্ন ভয়েস টাইপিং। আমরা আজকের এই পোস্টটিতে দেখাবো মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং এবং মুখে বলে বাংলা লেখা নিয়ে উপায় গুলো। আপনিও আমাদের নিয়মগুলো অনুসরণ করলে সহজেই মুখে বলে বাংলা লেখা লিখি করতে পারবেন খুব সহজে। মুখে বলে বাংলা লেখার জন্য আপনি অনেক ধরনের উপায় এবং অনেক ধরনের মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবেন। 

আপনি যদি যেকোনো মাধ্যম দিয়ে মুখে বলে বাংলা লেখা টাইপিং করতে চান তাহলে বিভিন্ন মাধ্যমের জন্য ডিভাইস গুলির ভিন্নতাও লক্ষণীয়। আপনারা যারা মোবাইল দিয়ে ভয়েস টাইপিং মুখে বলে বাংলা লেখা লেখি করতে চান তাহলে খুব সহজেই পারবেন কিন্তু কম্পিউটারে অথবা সহজে ভয়েস টাইপিং করা যায় না এর জন্য আমরা মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং দুইটি পদ্ধতি দেখাবো।

মোবাইলে ভয়েস টাইপিংঃ

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে এখন খুব সহজেই ভয়েস টাইপিং কিবোর্ড ব্যবহার করে লেখালেখির কাজ সম্পন্ন করা যায়। আমাদের এই মোবাইল ফোনে ভয়েস টাইপিং করার জন্য সচরাচর অনেক ধরনের সফটওয়্যার আছে যেগুলো দিয়ে খুব সহজে এবং নির্ভুল ভাবে ভয়েস টাইপিং মুখে বলে বাংলা লেখা লেখি করা যায়। সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সফটওয়্যার টি হল ‘‘জিবোর্ড কিবোর্ড’’। এই কীবোর্ডটি গুগলের নিজস্ব মোবাইল কিবোর্ড। 

এই কিবোর্ডের এর মাধ্যমে বাংলা ভাষা যেমন ইংরেজি ভাষায় ট্রান্সলেট করা যায় ঠিক একই ভাবে ভয়েস অপশনে গিয়ে মুখে বলে বাংলা লিখা লিখি খুব সহজে করা যায়। আপনারা যদি ‘‘জিবোর্ড কিবোর্ড’’ দিয়ে ভয়েস টাইপিং এর মাধ্যমে বাংলা লেখালেখির কাজ করতে চান তাহলে সর্বপ্রথম এই কিবোর্ডের বাংলা লেআউট এ গিয়ে লেআউট টি সি সিলেট করতে হবে। এরপর লেয়াউটের ভিতরে থাকা মাইকের মত চিহ্নের উপর ক্লিক করলে আপনি বাংলা ভাষায় যা বলবেন সেগুলো টাইপিং হতে থাকবে। 

এই ভয়েস টাইপিং কাজটি সোশ্যাল মিডিয়া এবং নোটসহ যেকোনো জায়গায় করতে পারবেন।আমাদের মোবাইল সফটওয়্যার এর মধ্যে আরো একটি জনপ্রিয় কিবোর্ড আছে সেটি হল, ‘‘রিদ্মিক কিবোর্ড’’। আমাদের দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা রিদ্মিক কিবোর্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকে। আমাদের দেশে যারা বাংলা ভাষায় ভয়েজ টাইপিং করে থাকে তাদের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০% মানুষ এর রিদমিক কিবোর্ড ব্যবহার করে ভয়েস টাইপিং এর মাধ্যমে বাংলা ভাষা লিখে থাকে।

আপনারা যারা রিদ্মিক কিবোর্ড ব্যবহার করে বাংলা লিখেন এখানে ছোট্ট একটি সমস্যা হল আপনি সম্পূর্ণ শব্দ বলার পরে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে তারপরে ড্যাশবোর্ড আপনার টাইপিং এর লেখাগুলো দেখাবে। কিন্তু আপনি যদি গুগল কিবোর্ড ব্যবহার করেন তাহলে মূলত এই সমস্যাটি কোন ভাবেই দেখাবে না বরঞ্চ সাথে সাথে ড্যাশবোর্ডে লেখাগুলো চলে আসবে। তাই আপনারা যারা মোবাইল দিয়ে ভয়েস টাইপিং করতে চান উপরের নিয়ম গুলো মেনে খুব সহজে এবং দ্রুত নির্ভুলভাবে ভয়েস টাইপিং বাংলা লিখতে পারবেন।

কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিংঃ

বর্তমান সময়ে কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং করে মুখে বলে বাংলা লেখালেখি করা অনেকটাই সহজ হয়ে পড়েছে। আপনারা যদি microsoft এ ভয়েস টাইপিং এর ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার কোন সফটওয়্যার যদি ডাউনলোড করে থাকেন তাহলে microsoft এর স্টোর থেকে ভয়েস টু টেক্সট নামক এই সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নিবেন। কম্পিউটারে আমার দেখা এই সফটওয়্যারটি বাংলা ভয়েস টাইপিং এর জন্য বেস্ট একটি সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ভয়েস টাইপিং করে বাংলা ভাষায় লিখতে পারবেন। 

আরো পড়ুনঃ মোবাইলে বাংলা লেখার সফটওয়্যার - সেরা বাংলা কিবোর্ড ডাউনলোড

এছাড়াও আপনার যদি কম্পিউটার থেকে ভয়েস টাইপিং করার খুবই প্রয়োজনীয় হয় তাহলে গুগল ডক্স এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজে এবং নির্ভুলভাবে ভয়েস টাইপিং করতে পারবেন। এবার আমরা আপনাদের দেখাবো কিভাবে কম্পিউটার থেকে ভয়েস টাইপিং করবেন বাংলা ভাষায় গুগল ড্রাইভের এর মাধ্যমে। চলো জেনে নিই গুগল ড্রাইভের ডগস ব্যবহার করে কিভাবে কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং করবেন। নিচে তা বিস্তারিত দেওয়া হলো।

কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং করার নিয়মঃ

সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার কম্পিউটারে গিয়ে গুগল ডগস ওপেন করতে হবে। এরপর আপনাকে নিউ ডকুমেন্ট এ ক্লিক করতে হবে। ডকুমেন্টে ক্লিক করলে একটি ড্যাশবোর্ডে সম্পূর্ণ সাদা ফাইল দেখাবে। এই ক্ষেত্রে ওপরে মেনু বার অপশনে গিয়ে টুল নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে। টুল নামক অপশনে ক্লিক করলে সেখানে কয়েকটি সাব মেনু বার দেখাবে। সেখান থেকে ভয়েস টাইপিং অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপরে আপনার কম্পিউটারে সাথে মাইক্রোফোনটি করতে হবে। 

মাইক্রোফোন টি সেটআপ দেওয়া হয়ে গেলে মাইক্রোফোন দিয়ে আপনি যেকোন ভাষায় কথা বললে তা অটোমেটিক গুগল ডক্স ডকুমেন্টে বাংলা লেখা উঠতে থাকবে। আপনি এই লেখাগুলো যেকোনো জায়গায় খুব সহজেই এবং নির্ভুলভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। উপরোক্ত নিয়মে আপনি আপনার কম্পিউটার দিয়ে ভয়েস টাইপিং এর মাধ্যমে নির্ভুল ভাবে এবং খুব দ্রুত টাইপিং করতে পারবেন।

অ্যাপ দিয়ে ভয়েস টাইপিংঃ

উপরোক্ত অ্যাপ্লিকেশন গুলো ছাড়াও আপনি অ্যাপস দিয়ে ভয়েস টাইপিং করতে পারবেন। অ্যাপস দিয়ে ভয়েস টাইপিং করলে আরো তাড়াতাড়ি এবং কম সময়ে বাংলা লিখা লিখে ফেলতে পারবেন। আপনারা যদি উপরোক্ত এপ্লিকেশন দ্বারা সন্তুষ্ট না হন তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ অ্যাপস দিয়েও অতি দ্রুত এবং আপনি যতক্ষণ মুখ দিয়ে বলতে পারবেন ঠিক তখন ভয়েস টাইপিং ড্যাশবোর্ডে বাংলা লেখা উঠতে থাকবে।আপনারা অ্যাপস দিয়ে ভয়েস টাইপিং করতে চাইলে গুগল প্লেস্টোরে গিয়ে ভয়েস টাইপিং অ্যাপস ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল রুট করার ১৪ টি সুবিধা বিস্তারিত জানুন

গুগল প্লেস্টোরে এমন অসংখ্য ভয়েস টাইপিং অ্যাপস আছে যেগুলোর মধ্যে সব অ্যাপস গুলো সঠিকভাবে কাজ করে না। আবার অনেক ধরনের সফটওয়্যার আছে যেগুলো গুগলের স্ক্রিপ্ট অনুসরণ করে এবং তাদের অ্যাপ এর মধ্যে ইমক্রিমেন্ট করে দেয়। আপনারা প্লে স্টোর থেকে বাংলা ভয়েস টাইপিং কীবোর্ড, বাংলা ভয়েস টু টেক্সট কিবোর্ড, বাংলা ভয়েস টু টেক্সট কনভার্ট, গোবরা গুগল কীবোর্ড এই অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে এবং অতি দ্রুত ভয়েস টাইপিং করে বাংলা লিখতে পারবেন। 

আবার আপনারা অনলাইনে বাংলা ভয়েস টাইপিং খুব সহজে করতে পারবেন। আপনি যখন কোন ধরনের সফটওয়্যার বা এপ্স ব্যবহার করতে চাচ্ছেন না সেই ক্ষেত্রে আপনি অনলাইনে ভয়েস টাইপিং করে বাংলা লিখতে পারবেন। আপনার কম্পিউটারে যদি মাইক্রোসফট ল্যাঙ্গুয়েজ ভয়েস টাইপিং করার জন্য ডাউনলোড করা থাকে তাহলে ভয়েস টু টেক্সট নামক এই সফটওয়্যারটি দ্বারা আপনি অনলাইনে খুব সহজে বাংলা ভয়েস টাইপিং করতে পারবেন।

শেষ কথাঃমোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং

পরিশেষে বলা যায় কিবোর্ড দিয়ে যদি আপনার বাংলা লিখতে বা ইংরেজি লিখতে সমস্যা হয় তাহলে উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে দেওয়া তথ্য গুলো অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই মোবাইল ও কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং এবং মুখে বলে বাংলা লেখা কাজগুলো সম্পন্ন নির্ভুলভাবে করতে পারবেন। আসো ঘরে আপনারা উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন কিভাবে মোবাইলে কম্পিউটারে ভয়েস টাইপিং করা যায়। আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url