একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান - ছেলেদের কয়টি বিয়ে করা যাবে

আসসালামু আলাইকুম, একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান সম্পর্কে এই পোস্টে আলোচনা করব এবং ছেলেদের কয়টি বিয়ে করা যাবে সে সম্পর্কে জানব। ইসলামিক ভাবে বলা যায় একজন পুরুষ বহুবিবাহ করতে পারবে। একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান কি বলে সে সম্পর্কে জানব।
ইসলামে একজন ছেলে একাধিক বিয়ে করতে পারবে কিন্তু বিয়ে করার জন্য শিয়া পুরুষ হতে হবে। ইসলামিক মতে বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক বহুরূপী ভিন্নতা রয়েছে। এ পোস্টে আমরা সবকিছু বিশ্লেষণ করবো।

সূচিপত্রঃ একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান

আলেমদের মতামত প্রথম দিককার

আলেমদের মতামতে আপনি ইসলামিক ভাবে একাধিক দিয়ে করার অনুমতি পাবেন। আপনি যদি একাধিক বিয়ে করে থাকেন তাহলে আপনার দুজনকে সমান অধিকার দিতে হবে। আপনি যদি একাধিক বিয়ে করার পরে স্ত্রীর প্রতি অক্ষম হন তাহলে আপনের ইসলামিক ভাবে বিয়ে করা ঠিক হবে না। একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান রয়েছে কিন্তু আপনার শিয়া পুরুষ হওয়ার প্রয়োজনও রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ আশুরায় ঘটে যাওয়া ঘটনা - আশুরার গুরুত্ব ও শিক্ষা

জোরপূর্বক কোনো বিবাহ করা ইসলামের নিষিদ্ধ রয়েছে। আপনার যদি একাধিক বিয়ে করার প্রয়োজন না থাকে তাহলে আপনার একটি বিয়ে করাই সুন্নত। আবার অন্যদিকে ইসলামে বলা রয়েছে একজন পুরুষ এ পর্যন্ত বিয়ে করতে পারবে।

ছায়েভি মাযহাবের ইমাম ইবনে নকীব আল মাসির বলেন, নিজে শুধু একজনের প্রতি আসক্ত থাকা উপযুক্ত। একাধিক বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে বা স্ত্রীর অনেক ধরনের শারীরিকভাবে ক্ষতি সম্মুখীন হতে পারে। কোরআনে বলা রয়েছে, একজন ব্যক্তি একটি বিয়ে করলেই উত্তম কারণ একাধিক বিয়ে হওয়ার কারণে পরিবারের অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে এতে একজন পুরুষ আর্থিকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

ধর্মীয় গ্রন্থে বহুবিবাহ

সূরা এবং আয়াতে বলা রয়েছে যে,
তোমাদের মধ্যে যদি আশংকা থাকে তোমরা এতিম অথবা মহিলাদের উপর ন্যায় বিচারের ক্ষমতা না করতে পারো তাহলে তোমরা সাধারণ নারীদের অর্থাৎ তোমাদের যাকে ভালো লাগে তুমি 2 অথবা তিনটি বিয়ে করতে পারো। তোমাদের মধ্যে যদি কোন ভয় থাকে যে একটির অধিক বিয়ে করলে তুমি সবার উপর ন্যায় বিচার করতে পারবেনা তাহলে তুমি একটি বিয়ে করো।

পবিত্র কোরআনে সূরা আন নিসাতে বলা রয়েছে তোমরা এতিমদের মাঝে সম্পদ গুলো বুঝ পাঠ করে দাও। তোমরা খারাপ জিনিসপত্রের মধ্য ভালো জিনিসপত্র এভাবে পরিবর্তন করো না। তাদের সম্পদ নিয়ে তোমরা নিজের সম্পদ এর সাথে জড়িত করবে না। কারণ এটাই তোমার জন্য ভালো হবে। একজন পুরুষ যদি একাধিক বিয়ে করার পরে নারীদের প্রতি সমান ন্যায় আচরণ না করে এবং তাদের উপর জোট ঝুলুম করতে থাকে তাহলে একজন পুরুষ একজন নারীকে বিয়ে করা উত্তম হবে কেননা তাদের উপরে কোন ধরনের জোর জুলুম করা উচিত নয়।

একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান বহু সূরা ও কোরানে বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা রয়েছে এগুলো নিয়ে আলোচনা করলে আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারবেন একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান কি বলে এবং কখন একাধিক বিয়ে করা আপনার প্রয়োজন রয়েছে।

জাহিলি যুগে বিবাহের সংবিধান

জাহিলি যুগে একজন পুরুষ একজন নারীর উপর সারা জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। তারা সেই যুগে একাধিক বিয়ে করার কথা কোন সময়ের জন্য চিন্তা করত না। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মের সময় একজনের বেশি বিয়ে করার কোন প্রথা ছিল না কারণ তারা মায়ের প্রথা হিসেবে নিয়মে কাজ করে যেত। মেয়ের ঘরে স্বামী থাকত এবং মায়ের সাথে মেয়েরা থাকতো। সহবাস করার জন্য তারা সন্তানকে মায়ের নামে পরিচিত।

আরো পড়ুনঃ আশুরার ছুটি ২০২৩ বাংলাদেশ - মহরম এর ছুটি ২০২৩

ছেলেমেয়ে বহুবিবাহ করুক না কেন উভয়ই সব সময় নিয়ম একই ধরনের থাকতো। এ যুগে বহুবিবাহের জন্য অনেক ধরনের বাগ বিতর্ক হতে থাকতো। ইসলামিক দিক দিয়ে নারীদের দৃষ্টিভঙ্গি একজন আরেকজনের চেয়ে ভিন্ন এজন্য দুইটি বিবাহ করা নিয়ে বিতর্ক চলত।

ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের নিয়ম

পবিত্র কোরআনে বলা রয়েছে মহান আল্লাহতালা ইরশাদ করেছেন, তোমাদের সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মাঝখান থেকে তোমাদের সারা জীবন থাকার জন্য জীবনসঙ্গী। যেন তোমাদের জীবনে শান্তি লাভ করতে পারবে। আল্লাহতালা তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা এবং দয়া সৃষ্টি করে দিয়েছেন।

স্বামী স্ত্রী দুজনের উভয় বিয়ের কারণে তারা মুক্ত হয়ে যায়। আমি তোমার কাছে বিয়ে দিব তুমি সঠিক মত তা জীবন সঙ্গী হয়ে থাকবে। কবুল বলার অর্থ হলো সম্মতি দেওয়া। বিয়ে করার সময় যখন কবুল বলে তখন এটা দ্বারা বোঝানো হয় যে আমি আমার স্ত্রীর গ্রহণ করে নিলাম। ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে করার পূর্বে ছেলে মেয়ে দুইজনার সম্মুখীন হয়ে তাদের সম্মতি নেওয়া উচিত যদি সে সম্মতি নেয় তাহলে তাদের বিবাহ দিতে হবে ।

যদি তারা বিবাহে সম্মতি না দেয় অন্য কোন ছেলে দেখে আবার তাদের ভিতরে জীবনসঙ্গিনী করে দিতে হবে। বিয়ে দেওয়ার জন্য কোন ধরনের জোরপূর্বক কাজ করা যাবে না যাতে মেয়ে অথবা ছেলের কোন ক্ষতি না হয়।

ছেলেদের কয়টি বিয়ে করা যাবে

ছেলেদের সর্বমোট যদি সে শিয়া-পুরুষ হয়ে থাকে চারটি বিয়া করতে পারবে। কিন্তু শর্তপূর্বক বলা হয়েছে যে চারজন আর সমান অধিকার দিতে হবে একজন ছেলে যদি একজন স্ত্রীকে বেশি অধিকার দেয় তাহলে সে বিয়েতে তার দায়ভার নিতে হবে। অনেক জায়গায় আবার বলা রয়েছে একজন পুরুষ একটি বিয়ে করা উত্তম কেননা একটি বিয়ে করায় একজন ছেলে সারা জীবন সঙ্গী হয়ে থাকতে পারবে এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম থাকবে সেও তো তার আর্থিকভাবে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। তবে মনে করা যায় একটি বিয়ে করা উত্তম।

কালিমা পড়ে বিয়ে করার নিয়ম

ইসলামের শরীয়তে বিয়ে করার পূর্বে স্বামী স্ত্রী দুজনার পছন্দ হতে হবে এরপরে তাদের বিয়ে দেওয়ার সময় একজন ইমাম তাদের মাঝে দুজনকে কবুল বলতে বলবে কবুল বলার মানে হল মেয়েকে বললে সে বলবে আমি স্বামী হিসেবে কবুল করলাম অর্থাৎ স্বামীকে গ্রহণ করিলাম আবার পুরুষের কাছে গিয়ে বলবে আমি স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করিলাম। একজন ব্যক্তি যখন কবুল বলে গ্রহণ করিবে তখন তার স্ত্রী তার স্বামীর কাছে আজীবন থাকতে বাধ্য হয়ে যাবে কেননা তখন সে তার স্বামীর কথা ছাড়া কোন ধরনের কাজ করতে পারবেনা।

কালেমা পড়ে বিয়ে করার মানে হল সে ইসলামিক শরীয়তে বিয়ে করিয়াছে। বিয়ে করার জন্য প্রথমে একবার কালেমা পড়িয়ে নিলে তারপরে তাকে আবার কবুল বলিতে হবে কারণ কবুল না বললে সে বিয়ে হবে না। ইসলামে বলা রয়েছে যে একজন ব্যক্তি তার জীবনসঙ্গিনী হওয়ার জন্য সাক্ষী থাকবে সাক্ষী ছাড়া অথবা নিজের ভাই ছেলেপক্ষের আবার মেয়ে পক্ষে নিজের ভাই বা বোন এভাবে নিজের কাছের মানুষ ছাড়া বিয়ে হবে না কেননা গ্রামবাসী যদি না জানে তাহলে সে বিয়ে উত্তম নয়।

আরো পড়ুনঃ ইংরেজি ক্যালেন্ডারে ১৪৪৫ হিজরি কত - ১৪৪৫ হিজরী ক্যালেন্ডার

বাবা মা সহ সবাইকে জানানোর পরে বিয়ে করলে সে বিয়ে হালাল ভাবে ধরা হয় এবং বিয়ের কাজ সম্পূর্ণভাবে করা হয় পরিবারসহ সবাই হাসিখুশি থাকে। উপরোক্ত একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান ও ছেলেদের কয়টি বিয়ে করা জায়েজ রয়েছে সে সম্পর্কে বলা হয়েছে।

শেষ কথাঃ একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান

আজকে আমরা এ পোস্টে সম্পূর্ণভাবে আলোচনা করেছে একাধিক বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান সম্পর্কে ও একটি ছেলে কয়টি বিয়ে করতে পারবে সে সম্পর্কে। আপনি যদি বিয়ে সম্পর্কে কোন কিছু না জানা থাকেন তাহলে অবশ্যই এ পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনার উপকারে আসবে। আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পরে হতে পারবেন বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিধান। ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url