আয়ুর্বেদিক কি? আয়ুর্বেদিক ঔষধের উপকারিতা

বর্তমান অবস্থায় বাংলাদেশ,ভারত ও পাকিস্তানের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বেশ প্রচলিত রয়েছে। এর পাশাপাশি চিকিৎসা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।এই চিকিৎসা আর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বলা যায়। আয়ুর্বেদিক কি এবং আয়ুর্বেদিক ঔষধের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। চিকিৎসাগুলো কি কি রয়েছে নিম্নে আলোচনা করা হবে। চলুন জেনে নেই।
বর্তমানে আমরা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিয়ে থাকি। কারণ এ চিকিৎসার সাইড ইফেক্ট একদমই নেই বলা যায়।পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই বলে এত জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

সূচিপত্র

আয়ুর্বেদিক কি?

আয়ুর্বেদিক শব্দের অর্থ হলো আয়ু মানে জীবন ও বেদ অর্থ হলো বিদ্যা অথবা জ্ঞান। অর্থাৎ আয়ুর্বেদ শব্দের মানে হলো জীববিদ্যা বা জীবনজ্ঞান। যে জ্ঞানের মাধ্যমে জীবের কল্যাণকর কাজ করা হয়ে থাকে সাধারণত তাকে আয়ুর্বেদ অথবা জীবন জ্ঞান বলা হয়ে থাকে। এইটি হল উদ্ভিদের মাধ্যমে যেগুলো চিকিৎসা দেওয়া হয় সাধারণত তাকে বোঝানো হয়। প্রাচীন যুগের এ চিকিৎসা। প্রাচীন যুগের মানুষ গাছপালা দিয়ে ঔষধ তৈরি করত এখন সেগুলো আয়ুর্বেদিক হিসেবে রূপান্তর হয়। বর্তমানে এই চিকিৎসা অল্টারনেটিভ ট্রিটমেন্ট অথবা হারবাল নামে পরিচিতি লাভ করেছে।

আরো পড়ুনঃ জ্বর ‍ নিয়ন্ত্রণ ঘরোয়া উপায়

এগুলোর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেমন শরীরকে অনেক দুর্বল করে ফেলে ও ওষুধগুলো হলো সিপ্রোফ্লক্রাসিন। এগুলো অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি ও জনশক্তি এবং কর্মশক্তি হ্রাস পায় বলে পাওয়া গেছে। এগুলো কোন কিছু পরোয়া না করে চিকিৎসকরা ওষুধের মাধ্যমে রোগ নিরাময় করে যাচ্ছে। এগুলোর মধ্য দিয়ে বর্তমান অবস্থায় এটি অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আয়ুর্বেদিক ওষুধ সব ধরনের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সাধারণভাবে বলা যায় এই ওষুধের সাইড ইফেক্ট একবারে কম।

আয়ুর্বেদিক মূল ধারণা

প্রাচীন চিকিৎসার একটি অঙ্গ হল আয়ুর্বেদ। এ চিকিৎসা ৫০০০ বছর পূর্বের পদ্ধতি গুলো উপলব্ধি করা হয়। বর্তমানে আয়ুর্বেদিক শব্দটির মানে দাঁড়িয়েছে জীবনের বিজ্ঞান। এর চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ নিরাময় করে স্বাস্থ্য জীবনের জোর করে দেওয়া হয়। এই চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো রোগ নিরাময় ব্যবস্থা করা। আয়ুর্বেদের মতে বলা যায়, মূল চারটি উপাদান মানব দেহের। চারটি উপাদান হল ধাতু,দোষ,অগ্নি ও মল। এর চারটি হলো চিকিৎসার মূলতত্ত্ব বলা হয়ে থাকে।

ধাতু
মানুষের শরীর অথবা মানব দেহকে বহন করে থাকে। আমাদের শরীরের মধ্যে সাতটি টি শুরু হয়েছে এগুলো হলো রক্ত, মাংস,রস,অস্থি,মেদ,শুক্র এবং মজ্জা।

দোষ
দোষকে সাধারণত তিনটি উপাদানে ভাগ করা হয়ে থাকে। এগুলো শরীরের সাথে একটি আরেকটির ক্যাটাবলিক এবং অ্যান্টিবলিক রাসায়নিকভাবে বিক্রিয়া করে শরীরের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। শরীরে তিনটি দোষ আমাদের হজম শক্তি ও পুষ্টি উপজাত এবং শরীরে বিভিন্ন কোষের মধ্যে ইত্যাদি তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে। এই দোষ গুলো যদি গোলাকার ধারণ করে তাহলে আমাদের শরীরের রোগের কারণ হয়।

অগ্নি
শরীরের মধ্যে তুহিক আগুনে সাহায্য অর্থাৎ রাসায়নিক ও সংক্রান্ত এর কাজের মাধ্যমে দৈহিক আগুনের সাহায্য একে বলা হয় সাধারণত অগ্নি। আমাদের শরীরে টিস্যু ও লিভার কোষের উৎপন্ন করার সময় রাসায়নিক পদার্থ বিশেষভাবে অগ্নি নামকরণ করা হয়ে থাকে।

মল
মূল সাধারণত শরীরের নোংরা ও আবর্জনা কে বোঝানো হয়ে থাকে। শরীরের মল সাধারণত তিন প্রকার হয়। প্রসাব মল ও ঘাম শরীরের সুস্থতা বজয়ের জন্য বজ্র পদার্থগুলো বাইরে বের হয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে বোঝানো হয়। সেজন্য শরীরে দুইটি জায়গা দিয়ে মল বেরিয়ে যায়। মল হলো শরীরে ধাতুর আবর্জনা।

আয়ুর্বেদিক দৈহিক গঠন

জীবনের জ্ঞান অথবা জীবনকে আয়ুর্বেদিক ভাবা হয়,আত্মা মন ও দেহের সাথে এটি সমন্বয় রয়েছে। মানব জীবনে দেহ সব ধরনের উপাদান যেমন তিন ধরনের ও সাধার ধরনের দোষ এবং রক্ত মাংস অস্থি,মজ্জা শুক্র এসবের মাধ্যমে একাকী ভবনের মতো কাজ করে থাকে। হজম প্রক্রিয়া আমাদের স্বাস্থ্যের উপরে নির্ভরযোগ্য। কিন্তু একটি অসুস্থ রোগীর শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক অবস্থা এবং অগ্নির প্রভাব পড়ে। আমাদের শরীরে খাবারের পচন পুরোটাই খাদ্যের উপর নির্ভর করে এর হজম শক্তি পরিবর্তন করে থাকে।

আয়ুর্বেদিক ঔষধের সুস্থতা ও অসুস্থতা

আমাদের শরীরের সুস্থ এবং অসুস্থতার সবকিছুই ভারসাম্য করে শারীরিক পরিস্থিতির উপর। আমাদের শরীরে দেহের উপরে অনেক ধরনের কারণ নেই ভারসাম্য থেকে তারতম্য হয়ে আসতে পারে। যথা শারীরিক ও মানসিক অস্বস্তি। আমাদের খাদ্য গ্রহণের সময় যদি কোন ধরনের ভুল ত্রুটি থেকে থাকে এবং জীবনযাপনের জন্য ভুল ত্রুটি থেকে থাকলে ভারসাম্যর অভাব হতে পারে। 

বদ অভ্যাসগুলো আমাদের জীবন থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। এগুলো সব কিছুর চিকিৎসা হলো ওষুধ গ্রহণ, প্রাকৃতিকভাবে মানসিক ভারসাম্য ঠিক করে আনা ও চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা করা।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা

চিকিৎসা হলো একটি মানুষের সঠিক চিকিৎসা তার সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। একজন শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক একটি রোগীকে রোগমুক্ত করতে পারে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে রোগী স্বাস্থ্য উন্নতির,রোগ রোধ ও সঠিক নিয়মে চিকিৎসা করা। চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের প্রধান কাজ হল শরীরের বিভিন্ন অংশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় সে ভারসাম্য গুলো ফিরিয়ে আনার জন্য অনুসন্ধান করে থাকে। শরীরে রোগ যেন না হয় সেই জন্য চিকিৎসক শরীরের জীবনযাত্রা পরিবর্তন করে ঔষধ দেয় ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে বলে।

একটি চিকিৎসক তার চিকিৎসার জন্য সর্বপ্রথম ঔষধ খাদ্য এবং কাজকর্ম করে থাকেন। এর জন্য তিন ভাবে প্রয়োগ করে দুই রকম ভাবে করা হয়ে থাকে। এই তিনটির মধ্যে একটি হলো একটিওলজিক্যাল খাদ্য এবং কাজকর্ম। এভাবে চিকিৎসা করলে একটি রোগীর বিভ্রান্তি থেকে মুক্তি পায় এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকে।

একজন সফল চিকিৎসক সঠিকভাবে চিকিৎসা প্রদানের জন্য তিনটি জিনিস অবশ্যই প্রয়োজনীয় রয়েছে। এগুলো হল

  • পরিষেবিকা
  • রোগী 
  • ঔষধ

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার দিক দিয়ে গুরুত্ব দিলে প্রথম স্থানে দিক দিয়ে বোঝা যায় চিকিৎসা। এই চিকিৎসার জন্য মানবিক বোধ সুন্দর মন ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চিকিৎসার জন্য ভদ্রতা দিক দিয়ে মানব জাতির কল্যাণকর করা উচিত। আর খাদ্য ও ওষুধের গুরুত্ব দেওয়ার কথা পড়ে আসে। এগুলো চিকিৎসা উন্নত মানের পদ্ধতি দিয়ে তৈরি করা হয় ও সর্বত্র সবসময়ই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের কাছ থেকে সবকিছু পাওয়া যায়। চিকিৎসককে সাধারণত অনেক মানুষ কবিরাজও বলে থাকে।

একটি সফল চিকিৎসক হওয়ার জন্য চিকিৎসা তিনটি উপাদান রয়েছে। চিকিৎসার জন্য সর্বপ্রথম ভালো জ্ঞান থাকা উচিত, চিকিৎসা দক্ষতা দীর্ঘ হতে হবে। পরিস্কার পরিছন্নতা সব সময় বজায় রাখার চেষ্টা করবে।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ধরণ

বিশুদ্ধ চিকিৎসা অর্থাৎ শোধন চিকিৎসা

একটি চিকিৎসার মাধ্যমে একটি রোগী শারীরিক ও মানসিক অস্বস্তিগুলো দূর করতে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। মানবদেহে শরীরের ভিতরে ও বাহিরে শুদ্ধ করনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিগুলো হল পঞ্চম কর্ম। তৈল ঔষধ,মলদ্বার দিয়ে তরল ঔষধ প্রবেশ করানো, নসিকার মধ্য দিয়ে ঔষধ প্রবেশ করানো। কৃত্রিমভাবে চিকিৎসা করা। ধমনী স্নায়ুতন্ত্র,শ্বাস-প্রশ্বাস ও পাচন প্রক্রিয়া চিকিৎসা শুদ্ধভাবে দেওয়া হয়ে থাকে।

প্রশমন চিকিৎসা

প্রশমন চিকিৎসা হলো এই রোগে যদি আক্রান্ত হয় তাহলে রোগের দোষগুলিকে দমন করে দেওয়া। দেহের ভারসাম্য নষ্ট না করে রোগীকে পূর্ব অবস্থায় ফিরে আনা। হজম শক্তি ব্যায়াম এগুলো যদি রোগী না করে থাকে তাহলে এগুলোকে জীবিত করে চিকিৎসা দেওয়া। খাদ্যের ভিতরে অনেক কিছু নিষেধ থাকে। এগুলো চিকিৎসা করে হজম প্রক্রিয়া কার্যক্রম চালু করা এগুলোর জন্য ঔষধ ব্যবহার করা।

খাদ্য ও কার্যকলাপের নিয়মাবলী

আমরা দৈনন্দিন জীবনে অনেক ব্যস্ততার কারণে অনেক ধরনের খাবার খেয়ে ফেলি যেগুলো দেখে আমরা খেয়াল করি না। এ খাবারের মধ্যে অনেক ধরনের আবর্জনা থাকতে পারে অথবা খাবারের ডেট নাও থাকতে পারে সেজন্য শরীরের অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয় এগুলো কারনে থেরাপির কার্যকারিতা ও প্যাথনজেনিক মাধ্যমে হজম করার মাধ্যমে শক্তি লাভ করার ব্যবস্থা লক্ষ্য করা।
অসুস্থ হওয়া ও অসুস্থ হওয়ার কারণ বর্জন করা

খাদ্যর জন্য শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ ধারন করে থাকে এগুলো বর্তমান জীবনযাত্রায় সাধারণ রোগ বলা হয়ে থাকে। সেগুলো কারণে খাদ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ খাদ্যর জন্য রোগীর অনেক বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাই এগুলো সব কিছু পরিত্যাগ করা।

মানসিক রোগ চিকিৎসা

মানসিক সাধারণত অসুবিধায় বেশি কাজ করে থাকে কারণ মনকে কোন সময়ের জন্য স্থির করতে পারেনা স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যায় ও মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। বলেন মানসিক রোগের জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি উল্লেখ করা আছে।

পুর্নযৈবনপ্রাপ্তির জন্য ঔষধ

রাসায়নিক চিন্তার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে মানবদেহের প্রাণশক্তি ও শক্তি আয়রনের চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে। কাঠামোর মাধ্যমে বুদ্ধি স্মৃতিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও যৌবন জড়িত কোন ধরনের কাজকে উন্নত রেখে শরীরের পূর্ণ শক্তি সংরক্ষণ করা উপকারিতা। এগুলোর জন্য অসমে শরীরের ক্ষয় রোধ করতে হবে এবং ব্যক্তিগতভাবে রসায়ন চিকিৎসার মাধ্যমে ভূমিকা পালন করতে হবে।

শেষ কথা

আয়ুর্বেদিক কি এবং আয়ুর্বেদিক ওষুধের উপকারিতা সম্পর্কে উপরোক্ত আলোচনা করা হয়েছে এর উৎস হলো সনাক্ত করা এটি একটি মৌখিক রীতি হিসেবে বলা যায়। এখন পার্শ্ব তিক্রিয়ার মাধ্যমে অনেক ধরনের কাজ দেখিয়ে তারা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এর অর্থবেদে বলা যায় সংক্রান্ত ১১৪ টি প্রান্তর রয়েছে দেহের মধ্য। চিকিৎসার কথা বলা হয় যে প্রাকৃতিকভাবে চিকিৎসা নেওয়া। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url