ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার - ডেঙ্গু রোগের ওষুধ

আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমরা এই পোস্টে জানবো ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে। ডেঙ্গু জ্বর রোগটি হলো ভাইরাসজনিত একটি রোগ। এ রোগের কারণে মানুষ অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ে এবং এই প্রতিকার সম্পর্কে না জানা কোনে আরো অনেক অসুস্থ হয়ে যায়। তাই আজকে আমরা ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে জানব ও ডেঙ্গু রোগের ঔষধ।
ডেঙ্গু জ্বর হয় সাধারণত এসিড মশার কামড়ের কারণে। এ মশা কোথায় সৃষ্টি হয় এবং মানুষের শরীরে ডেঙ্গু জ্বর কিভাবে প্রবেশ করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা অনেকেই জানিনা ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে। তাই দেরি না করে জেনে নেই।

সূচিপত্রঃ ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার

সাধারণত আপনাকে যতক্ষণ পর্যন্ত এসিড মশা না কামড় দিবে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। আপনাকে এসিড মশা যখন কামড় দেবে তখন আপনি মশার কামড়ে রোগের সংক্রমিত হবেন। এই দেশে অতিরিক্ত পরিমাণ ডেঙ্গু মশার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ও মৃত্যুর আস্তে আস্তে বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো গেছে যে এক দিনে অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তি ছয়জনের মৃত্যু হচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ দাঁতের ফিলিং কিভাবে করে - দাঁতের ফিলিং কত প্রকার

এই বছরের মধ্যেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পরে মৃত্যুর সর্বোচ্চ ধাপ। এই বছরের মধ্যে জুলাই মাসে ৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। চলতি বছরের মধ্য ডেঙ্গুতে সংক্রমণ হয়ে সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে 73 জনের। চলুন আমরা নিম্নে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণগুলো জেনে নেই।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
আপনাকে যদি ডেঙ্গু মশা আক্রমণ করে তাহলে সর্বপ্রথম আপনার জ্বর শুরু হবে। আপনার শরীরের জ্বরের মাত্রা যদি ১০১ থেকে ১০৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় তাহলে আপনি বুঝবেন আপনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে আপনার শরীরে জ্বর থাকবে এমন কি আপনার শরীর দিয়ে ঘাম ঝরবে কিন্তু পরবর্তীতে আবার জ্বর আসবে। আপনার শরীর অনেক ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে এবং খিদা কমে যাবে। আপনার শরীরের খিটমিটে মেজাজ দেখা দিবে।

যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তাহলে আপনার অতিরিক্ত পরিমাণ পেট ব্যথা করবে পেট ফুলে যাবে, রক্ত বমি হবে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে, ঘাম ঝরবে কিন্তু শরীর দিয়ে জ্বর যাবে না এবং অতিরিক্ত পরিমাণ ঘুম হবে। আপনাকে যখন ডেঙ্গুতে আক্রমণ করবে তখন আপনার দেহে পানি শূন্যতা ঢুকতে পারেন। এই সময় আপনার দেহের যে পাল্স রয়েছে এটা অতিরিক্ত পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে এবং আপনার দেহের রক্তচাপ কমে যাবে।

আপনি খুব দ্রুত শ্বাস নিবেন এবং শরীরের ভিতর অস্থিরতা বোধ করবেন এই সময় সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেলে ভর্তি হওয়া উচিত। ভর্তি যদি না হন তাহলে আপনার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।

ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার
আপনার ডেঙ্গু জ্বর হলে ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দিবে একটি প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়ার জন্য। জ্বর হলে যখন শরীর ব্যথা হয় তখন আপনারা না জেনে না বুঝে অনেক ধরনের ব্যাথা কমানোর জন্য ওষুধ । এরকম অবহেলার মধ্য দিয়ে যদি আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ওষুধ খান তাহলে আপনার বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনবে। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ শরীর ব্যাথা করে আর ব্যাথা মারা ঔষধ খান তাহলে আপনার শরীরে রক্তক্ষরণ হতে পারে এর ফলে আপনার মৃত্যুর ডেকে আনতে পারে। ডেঙ্গুজ্বর হলে ডাক্তার তরল খাবার খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।

আরো পড়ুনঃ শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার - বাচ্চাদের ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা

তরল খাবার খেলে আপনার ৯০% ডেঙ্গুর যে তীব্রতা রয়েছে তা কমিয়ে দিবে। প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কারণে প্লাটিলেট কমিয়ে দেয়। এটা বাড়ানোর জন্য আপনাকে খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হবে। আপনি যদি পেয়ারা শরবত করে খান তাহলে অনেক উপকার আসবে কেননা পিয়ারেতে রয়েছে ভিটামিন সি যা ডেঙ্গুকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি ভিটামিন সি এবং প্রোটিন যুক্ত ও তরল খাবার খান তাহলে প্লাটিলেট বাড়িয়ে তুলবে।

ডেঙ্গু জ্বর ভালো হতে কত দিন সময় লাগে

আপনার শরীরে যদি ডেঙ্গু মশা অর্থাৎ এসিড মশা কামড় দেয় তাহলে আপনি প্রথম দিনেই বুঝতে পারবেন। আপনার শরীর অতিরিক্ত পরিমাণ গরম হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত জ্বর চলে আসে এজন্য ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রথম দিনেই বোঝা যায়। আপনার শরীরে ডেঙ্গু জ্বর সর্বনিম্ন তিন দিন এবং সর্বোচ্চ ছয় দিন থাকবে। এর জন্য আপনাকে চিকিৎসা করতে হবে আপনি যদি চিকিৎসা ছাড়া এভাবে বসে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে অনেক বিপদ আসবে।

ডেঙ্গু জ্বর হলে এক ধরনের সংকটকাল বলা যায় কারণ আপনার জ্বর যদিও ভালো হয়ে যায় তারপরেও দুইদিন থেকে তিন দিন থাকতে পারে। এক কথায় বলা যায় যে আপনি যদি গুরুত্ব সহকারে ডাক্তারের চিকিৎসা অনুযায়ী ঔষধ খান তাহলে ৬ দিনের মধ্যে আপনার শরীর থেকে চলে যাবে।

ডেঙ্গু জ্বর কি ভাইরাসজনিত রোগ

ডেঙ্গু জ্বর হলো এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। ডেঙ্গু জ্বর এর সমার্থক শব্দ হল ভিন্ন অথবা ডেঙ্গি। এটাকে সাধারণত এসিড মশা সংক্রমণের কারণে যে শরীরে প্রবেশ করে গ্রীষ্মকালীন অবস্থায় এর রোগ হয়ে থাকে। ডেঙ্গু জ্বর যদি হয় তাহলে আপনার শরীর ব্যথা হবে এবং বমি বমি ভাব হবে। আপনার শরীরে চামড়ায় ফুসকানি জাতীয় কিছু দেখা দিবে। এটা দুইদিন থেকে সাত দিনের মধ্যে আপনার শরীরের মধ্যে একদম একজাস্ট হয়ে যাবে। এই রোগটি সাধারণত গ্রীষ্মকালীন সময় বেশি হয়ে থাকে।

যখন গ্রীষ্মকালীন সময় আসবে তখন এসিড মশা বেশি পরিমাণ বৃদ্ধি হতে থাকে। এ রোগটি অনেক মানুষ মনে করে একজন আর হলে আরেকজনের হবে। কিন্তু তা নয় যখন পরিবেশে গ্রীষ্মকালীন অবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণ এসিড মশা শুরু হয় তখন এটা ছড়িয়ে ছিটে থাকে ওই সময় আপনার শরীরে এ মশা যদি আক্রমণ করে তাহলে তার যে সংক্রমণ রয়েছে তার শরীরে প্রবেশ করে এর ফলে আপনার ডেঙ্গু জ্বর হয়। ডেঙ্গু জ্বর হলে উপরোক্ত ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

ডেঙ্গু মশা ডিম পাড়ে কোথায়

ডেঙ্গু মশা সাধারণত বর্ষাকালে বিস্তার লাভ করে। বর্ষাকালে অনেক জায়গায় পানি জমে থাকে এই সময় তারা ওইসব জায়গা বেশি পছন্দ করে যেমন আপনার বাসায় যদি প্লাস্টিকের কোন জাতীয় কিছু বাইরে পড়ে থাকে ওইটাই যদি পানি জমে থাকে এক সপ্তার মধ্যে তারা ওই স্থানের ডিম দিয়ে মশার বৃদ্ধি করে। এছাড়াও তারা বাহিরে এবং ভিতরে যেগুলো পানি জমা স্থান রয়েছে এগুলো স্থানে ডিম দিয়ে মশা বিস্তার করতে সক্ষম হয়।

আরো পড়ুনঃ কি কি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

অনেক সময় বাড়ি চারপাশে অনেক জায়গায় গর্ত করা থাকে বর্ষাকালে ওইসব জায়গা ভর্তি হয়ে যায় সেই সময় তারা ওইসব জায়গা আরও বেশি পছন্দ করতে থাকে। তাই বাড়ির ভেতরে অথবা বাইরে যদি বর্ষাকালে পানি জমে থাকে তাহলে সে পানিগুলো বাহির করে দিন।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হয়

আপনাদের ডেঙ্গু জ্বর হয় তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথম তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর হলে যদি ডাক্তারের চিকিৎসা নেন তাহলে ডাক্তারও সর্বপ্রথম তরল খাবার খেতে বলেন। আপনার বাসাতে যদি ফলমূল থাকে অর্থাৎ ডাবের পানি, কোন ফলের জুস, স্যালাইন এগুলো খেতে হবে। প্রোটিন সমৃদ্ধ যেগুলো খাবার রয়েছে এগুলো আপনাকে খাওয়ার প্রয়োজন হবে। আপনি যদি পারেন বেশি পেয়ারা জুস করে পান করবেন এতে আপনার অনেক উপকারে আসবে।

ডেঙ্গু রোগের ঔষধ

আমরা উপরোক্ত ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে জেনেছি চলুন আমরা নিম্নে জেনে নেই ডেঙ্গু রোগের কি ওষুধ রয়েছে। ডেঙ্গু রোগ হলে সাধারণত ডাক্তাররা প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। প্যারাসিটামল ওষুধ খেলে আপনার শরীরে রোগের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া যদি অতিরিক্ত পরিমাণ রোগের বৃদ্ধি পায় তাহলে বাসাতে বসে না থেকে মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার জন্য পরামর্শ করে থাকেন।

শেষ কথাঃ ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার

আমরা এ পোষ্টের মধ্যে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে ও ডেঙ্গু রোগের ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আমরা এ পোষ্টের মধ্য ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে সমস্ত কিছু আলোচনা করেছি। ডেঙ্গু জ্বর হলে কি কি করণীয় এবং রোগের ঔষধ গুলো কি কি রয়েছে সেগুলো সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই দিনগুলোকে লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারবেন ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url