দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় - ৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

আসসালামু আলাইকুম,প্রিয় পাঠক বাংলাদেশের ডায়াবেটিসের আক্রমণ সংখ্যা সবচাইতে বেশি। কারণ দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় অনেকেই জানিনা। আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে হবে। আজকে আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে জানব।
ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোন কমে যায়। যার কারণে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছানো সম্ভব হয় না। এতে রক্তের গ্লুকোজ বেড়ে যায়।

সূচিপত্রঃ ৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

ভূমিকাঃ দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

ডায়াবেটিস এমন এক ধরনের রোগ যা শরীরকে দুর্বল করে দেয়। এমনকি শরীর থেকে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যায়। ডায়াবেটিস মানুষের শরীরে অজান্তে হয়ে যায়। যার প্রভাব শরীরের হার্ট, লিভার, চোখ, কিডনির মত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যার ফলে শরীরে জটিলতা হলে মাল্টি  অর্গ্যান ফেলিওনের সম্ভাবনা থাকে। শরীরে ডাইবেটিকস থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। যার কারনে শরীরকে সাবধানে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে ডাইবেটিস থাকলে প্রসবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ সোহেল থেকে বের হয়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ পেঁয়াজের তেল বানানোর নিয়ম - পেঁয়াজের তেলের উপকারিতা

ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা গবেষণায় বলেছে, খাবারের রক্তের শর্করার পরিমাণ অনেকটা নির্ভর করে ডায়াবেটিকস রোগীর জন্য। তাই দ্রুত ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় জানতে হবে। ডায়াবেটিকস রোগটি কোন বয়স নির্ধারিত করে না। এটি শিশু বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক যুবকদেরও হতে পারে। আর এই রোগটি যদি একবার শরীরে আক্রমণ করে তাহলে কোটি টাকা খরচ করেও এই রোগ দূর করা যাবে না।

তাই দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস এর মূল আকর্ষণ খাবার হলো মিষ্টি জাতীয় খাবার। মিষ্টি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস কে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। তাই আমরা দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে জেনে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা সহায়তা করবে। ডায়াবেটিসের কারণে আমাদের শরীরের রক্তের সুগার তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এটা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সুগার লেভেল বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে আমাদের জানা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ উপায় জানা না থাকলে। আমাদের শরীরের নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে আর এই ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের নিয়মিত শাকসবজি, ভিটামিন সি, ডিম, ডুমুর,মটরশুঁটি, চর্বিযুক্ত মাছ ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে হবে। এগুলা খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের প্রতিদিনের রুটিং এ এক থেকে দুই ঘন্টা হাঁটাচালাও করতে হবে।

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

অতিরিক্ত ফাস্টফুড, চিনে অথবা মিষ্টি জাতীয় খাবার, কার্বোহাইড্রেট খাবার ইত্যাদি এগুলা শরীরে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। দ্রুত ডায়াবেটিক্স নিয়ন্ত্রণ করার উপায় শরীরের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে ফাস্টফুড ও মিষ্টি জাতীয় খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিদিনের খাবারে এমন কিছু খাবার প্রতিনিয়ত করতে হবে যা রক্তকে শর্করা বাধিত স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। আমাদের প্রথম  জানতে হবে ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখার কিছু খাওয়া সম্পর্কে। চলুন আমরা দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলো জেনে নিই।

শাক সবজি
ডায়াবেটিসের জন্য প্রতিদিন নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে। দরকার হলে মাছ মাংস এর পরিবর্তে অধিক পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে। এতে শরীর সুস্থ থাকবে এবং ওজন ও নিয়ন্ত্রণ হবে।

ভিটামিন সি
আমাদের প্রতিদিন নিয়মিত শাকসবজি খাওয়ার পাশাপাশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।যেমন লেবু, তেতুল ইত্যাদি। এতে চোখ, হার্ট, কিডনি ভালো থাকে।

চর্বিযুক্ত মাছ
চর্বিযুক্ত মাছের মধ্যে রয়েছে সার্ডিন, হেরিং, স্যালমন ইত্যাদি মাছ। এগুলা মাছ নিয়মিত খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও অনেকটা কম থাকে। এগুলা খাবারের সাধারণত ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

ডুমুর
ডায়াবেটিস রোগীদের ওপর পুষ্টিকর খাবার হিসাবে দারুন প্রভাব ফেলে ডুমুর। ডুমুরের মধ্যে ফাইবার পরিমাণ বেশি রয়েছে। যার ফলে শরীরে রক্তের সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় পাওয়া গেছে ডুমুরে হাইপোগ্লাইসেমিক উপাদান রয়েছে। যা শরীরের ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ক্ষমতায় সক্ষম হয়। ডুমুরের পাতাও ইনসুলিন প্রতিরোধের অনেকটা উপকারী।

টকদই
টকদইয়ে সাধারণত ভিটামিন সি পাওয়া যায়। যা শরীরের রক্তে সরকাররা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। ওজন কম রাখতে সহায়তা করে। এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়। নিয়মিত টকদই খেতে পারলে শরীরে অনেক উপকার হয়। যা দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হয়ে দাঁড়ায়।

ডিম
শরীরের রক্ত চরখার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রয়েছে ডিমের। আমাদের উচিত প্রতিদিন একটা করে ডিম খাওয়া। তবে ডিম কিন্তু সিদ্ধ করে খেতে হবে। হার্টের রোগীরাও নির্ভয়ে ডিম খেতে পারবেন।

মেথি
মেথি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। এমনকি মেথি গ্লুকোজ শাওনশীলতা উন্নত করতে এবং রক্তের সরকারের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এতে ফাইবার বেশি থাকে। মেথি হজম শক্তি  কমিয়ে দেয় যাতে রক্তের সুগার সঠিকভাবে শুষে যায়। মেথি ডায়াবেটিস অভয় নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় এর মধ্যে মেথি একটি।

আরো পড়ুনঃ পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় - পা ফাটার ক্রিম

২ চা চামচ মেথি সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানোন পানি পান করতে হবে। এছাড়া প্রতিদিন মেথির বীজ গুড়া করে ঠান্ডা এবং গরম পানি অথবা দুধের সাথে মিশে খেলে দ্রুত ডায়াবেটিক্স নিয়ন্ত্রণ হবে।

মটরশুঁটি
মটরশুঁটির গ্লাইসেমির ইনডেক্স খুবই কম। মটরশুঁটিতে অধিক পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে। মটরশুঁটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। আপনি ব্রকোলি খেতে পারেন। এতে কার্বোহাইড্রেট একেবারে নেই এবং পুষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে রক্ষা করে। 

করলা
ডাইবেটিকস কমানোর জন্য করলা একটি উপকারী উপায়। করলাতে রয়েছে ইনসুলিন পলি পেপটাইড পি। এটি হাইপারগ্লাইসেমিয়ার মাত্রা বেশি করার ক্ষমতা রাখে। করলাতে ক্যারোটিন এবং মমর্ডিসিন নামক দুইটি প্রয়োজনীয় যোগ থাকে যার অর্থ সরকারের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ডায়াবেটিস কমাতে সপ্তাহে একবার হলেও করলার তরকারি রান্না করা উচিত। অতি দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হিসেবে একটি। খালি পেটে প্রতিদিন সকালে করলার রস এক গ্লাস পান করতে হবে। যার কারণে আপনি আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

গায়নূরা প্রোকাম্বেন্স ডায়াবেটিস গাছ

গায়নূরা প্রোকাম্বেন্স নামের ঔষধি গাছ ডায়াবেটিস সাড়াতে সারা বিশ্বে এই গাছটি ব্যবহার করা হচ্ছে। চীনে এন্টি ভাইরাস হিসেবে ব্যবহৃত রয়েছে।গায়নূরা প্রোকাম্বেন্স গাছটি বোটানিক্যাল নাম হলেও ইংরেজিতে একে সাবুঙ্গা এবংচীনে এটিকে জিয়ান ফেঙ উইই বলা হয়। যাদের প্রেসার, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরল আছে তারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুইটি পাতা সেবন করতে পারেন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হবে। যাদের গ্যাস্ট্রিকের আশা রয়েছে তারা খালি পেটে সকালে এবং রাতে দুই পাকা সেবন করতে হবে।

মানুষের শরীরে ডায়াবেটিসের থাকলে ধূমপান এবং মদ্যপান বর্জন করতে হবে। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় আমাদের সকলেরই জানা উচিত। তারপর নিয়মিত সুগার লেভেল ঠিক করতে হবে। নিয়মিত ওষুধ করতে হবে। সারাদিনে ন্যূনতম ১ থেকে ২ ঘন্টা হাটাহাটি করতে হবে। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ডায়াবেটিসের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চিয়া সিডস
চিয়া সিডসের মধ্যে থেকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা আমাদের শরীরের রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণ করে চিয়া সিডস। এটি নিয়মিত খেলে আপনার শরীরে অনেক রকম উপকার পাবেন।

ফ্ল্যাক্সসিডস
ফ্ল্যাক্সসিডস বা তিসিবীজও শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এটি নিয়মিত খেলে প্রেশার ও সুগার নিয়ন্ত্রণ থাকে কোলেস্টেরলের সমস্যাতেও কিন্তু এটি বেশ উপকারী। ইনসুলিনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণের কিন্তুফ্ল্যাক্সসিডস ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আমের পাতা
আমের পাতা ডায়াবেটিসের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে। আমের কমল পাতা আমাদের শরীরের রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের করে। আমের পাতা ডায়াবেটিসে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। আমের পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসার জন্য খুবই উপকারী। আমের পাতায় ভিটামিন সি, ট্যানিন থাকে। শক্তিশালী এন্ট্রিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিসের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে নিয়োজিত হয়। ডায়াবেটিস কমাতে আমের পাতাগুলো ধুয়ে শুকিয়ে ভালোভাবে গুড়া করে নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ সকালে কি কি ব্যায়াম করা উচিত বিস্তারিত জানুন

প্রতিদিন সকালে এবং রাতে আমের পাতার গুড়া পানিতে মিশিয়ে পান করতে হবে। আমের তাজা পাতা সিদ্ধ করে এক গ্লাস পানিতে সারারাত ঠান্ডা করতে দিতে হবে। সেই পানিটি সকালে খালি পেটে পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।এতে ডায়াবেটিসের পরিমাণ কমে যায়।

ডায়াবেটিসের রোগী প্রতিনিয়ত বাড়ছে

ডায়াবেটিস ফেডারেশন এর বৈশ্বিক মহামারী ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক হিসেবে ঘোষণা করে । অধিকাংশ দেশে ব্যাপক হারে ডায়াবেটিস রোগের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যদিও কিছু কিছু উন্নত দেশে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি কমাতে পেরেছে। আফ্রিকার পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া দেশগুলোতে সবচাইতে বেশি ডায়াবেটিসের রোগী দেখা যায়। বাংলাদেশের চিত্র মোটেও সুরক্ষা জনক নয়২০২১ সাল অনুযায় পাকিস্তানের পর বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের সংখ্যা সবচাইতে বেশি।

শেষ কথাঃ ৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে জেনেছি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের খাওয়া দাওয়া এবং সুগার লেভেল ঠিক করতে হবে। বেশি বেশি শাকসবজি খেতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে এক ঘণ্টা করে হাঁটাহাঁটি করতে হবে। খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে ভিটামিন সি ইত্যাদি। আমাদের এই পোস্টটি আপনার কাছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url